ই-কমার্স বিকাশে ‘বাধা’ টেলিকম কোম্পানিগুলো

মোবাইল টেলিকম কোম্পানিগুলো ই-কর্মাস ব্যবসায় নামায় দেশি ই-কমার্স শিল্প হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।

তারা অভিযোগ করেছেন, টেলিকম কোম্পানিগুলো অবৈধভাবে ই-কমার্সের ব্যবসা করছে।

শনিবার রাজধানীর বেসিস মিলনায়তনে ‘দেশীয় ই-কমার্স শিল্পের জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা– নেট নিউট্রালিটি ও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে উদ‌্যোক্তারা এ অভিযোগ করেন।

দেশীয় উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ‌্যে বিদেশি ই-কমার্স কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমতি না দেওয়ার দাবিও জানান তারা।

রকমারি ডটকমের প্রধান নির্বাহী মাহমুদুল হাসান সোহাগ বলেন, “ই-কর্মাস ব্যবসায় প্রধান অনুষঙ্গ হল ইন্টারনেট। টেলিকম কোম্পানিগুলো যদি ই-কর্মাস ব্যবসায় নামে তাহলে একটি অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হবে।

“কারণ তাদের হাতে ইন্টারনেট আছে, তারা এটি অপব্যবহার করে নিজস্ব কোম্পানির সাইটে বেশি গতি এবং অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো সাইটে কম গতি দিতে পারে।”

বেসিসের জ‌্যেষ্ঠ সহ সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহারে সমতা নীতি প্রবর্তন করতে হবে। কিছু সাইট বিনা পয়সায় দেখানো হবে, এটা কখনই হতে পারে না। এর ফলে ‘অসুস্থ প্রতিযোগিতা’ শুরু হবে।

“বিদেশি কোম্পানিগুলো এখন তাদের সাইট ব্যবহারে ইন্টারনেট ডেটা ফ্রি করে দিচ্ছে। সব কিছু তাদের দখলে গেলে তখন আর ফ্রি থাকবে না।”

ব্যারিস্টার এ বি এম হামিদুল মিসবাহ বলেন, আইন অনুযায়ী টেলিকম কোম্পানিগুলো ই-কর্মাস ব্যবসা করতে পারে না। বেসিসের সাবেক সভাপতি ও আজকের ডিলের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরূর বলেন, “ই-কর্মাস শিল্পে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সৃষ্টি করতে হবে। আর এর জন্য সবার আগে প্রয়োজন নেট নিউট্রালিটি।

“টেলিকম কোম্পানিগুলো আজ ই-কমার্স ব্যবসায় নামছে। এতে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা বিঘ্নিত হচ্ছে। কারণ তাদের হাতেই ইন্টারনেট।”

বেসিস সভাপতি মোস্তফা জব্বারও মোবাইল টেলিকম কোম্পানিগুলোর ই-কমার্স ব্যবসার বিরোধিতা করে বলেন, “মোবাইল টেলিকম কোম্পানিগুলো রাক্ষসে পরিণত হচ্ছে। যেমন, বড় মাছ ছোট মাছকে খেয়ে ফেলে। তারা যদি এই ব্যবসায় নামে তাহলে দেশীয় কোম্পানিগুলো হুমকির মুখে পড়বে।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ই-কর্মাসের প্রসারের জন্য সব সহযোগিতা সরকার দেবে।

“ই-কমার্স নীতিমালা নিয়ে কাজ হবে। আমরা আশা করছি, অতি দ্রুতই একটি ই-কমার্স নীতি পাব।”

দেশীয় ই-কমার্স রক্ষা এবং বিকাশে বেসিস, ই-ক্যাব, আইপিএস, বিপিও মিলে একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হবে বলে জানান মোস্তফা জব্বার।

দেশীয় ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের অর্থ জোগান দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি তহবিল গঠনের দাবি জানান রকমারি ডটকমের প্রধান নির্বাহী মাহমুদুল হাসান।