ভোক্তার অভিযোগ নিষ্পত্তি হবে ‘ডিজিটাল’ ব্যবস্থায়

বুধবার ভোক্তা অধিকার দিবসে ‘কনজ্যুমার কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ উদ্বোধন করা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 March 2023, 04:19 AM
Updated : 15 March 2023, 04:19 AM

দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোক্তার অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হচ্ছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘কনজ্যুমার কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ বা সিসিএমএস।

‘নিরাপদ জ্বালানি, ভোক্তাবান্ধব পৃথিবী’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে বুধবার ভোক্তা অধিকার দিবসে এ প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করা হবে। এ বছর দেশের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নানা আয়োজনে দিবসটি উদযাপন করা হবে।

‘কনজ্যুমার কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ এর মাধ্যমে ভোক্তার অভিযোগ গ্রহণ থেকে শুরু করে নিষ্পত্তি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। ফলে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি ছাড়া অন্যান্য প্রক্রিয়ায় ভোক্তার সশরীরে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন হবে না।

পাশাপাশি ভোক্তার অভিযোগের বিপরীতে জরিমানা করা অর্থের ২৫ শতাংশ প্রণোদনা নগদের পরিবর্তে ডিজিটাল বা ই-পেমেন্টে পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ।

এতোদিন শুধু ঢাকায় পরীক্ষামূলকভাবে চলা ‘সিসিএমএস’ ব্যবস্থা ১৫ মার্চ থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে পথচলা শুরু করবে। এতে সফলতা দেখা গেলে পুরো দেশে তা কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

ভোক্তা অধিকার দিবস সামনে রেখে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশী বলেন, “ভোক্তাদের স্বার্থ বিবেচনা করে ২০০৯ সালে আইনটি হয়েছে। এখন এ আইনের সুবিধাটি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। সীমিত সংখ্যক জনবল নিয়েই আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি ভোক্তার অধিকারের বিষয়টি তাদের কাছে পৌঁছে দিতে।”

ভোক্তা অধিকারের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে পারলে এ দিবস পালন আরও যথাযথ হবে বলে মনে করেন তিনি।

Also Read: ই-কমার্স নিয়ে অভিযোগ জানানো যাবে ‘সিসিএমএস’ প্ল্যাটফর্মে

ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে ২০০৯ সালে বাংলাদেশে ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন’ করা হয়। ২০১০ সালে এ আইনের আওতায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রতিষ্ঠা করা হয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভোক্তাদের কাছ থেকে অধিদপ্তর ৮৮ হাজার ৯১৮টি লিখিত অভিযোগ পেয়েছে। এরমধ্যে ৮৩ হাজার ৭৯৮টি বা ৯৪ দশমিক ২৪ শতাংশ অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়েছে।

নিষ্পত্তি হওয়া অভিযোগের মধ্যে দণ্ডিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮ হাজার ৩২৮টি। অর্থাৎ মাত্র ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ড দিয়েছে ভোক্তা অধিদপ্তর।

এই সময়ে অভিযোগ নিষ্পত্তির মাধ্যমে জরিমানা হিসেবে আদায় করা হয়েছে ৫ কোটি ৮৫ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা।

আর বিভিন্ন বাজারে অভিযানের সময়ে জরিমানা হিসেবে আদায় করা হয়েছে ১০২ কোটি ৯৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এ দুটি খাত মিলিয়ে জরিমানার মোট পরিমাণ ১০৮ কোটি ৮০ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।

ভোক্তাদের মধ্যে ৮ হাজার ১৯৭ জন অভিযোগকারী জরিমানার ২৫ শতাংশ হিসেবে পেয়েছেন ১ কোটি ৪৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।

ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ভোক্তাদের কাছ থেকে ১৬ হাজার ৫৪টি অভিযোগ পেয়ে নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১১ হাজার ৪৮৭টি বা ৭১ দশমিক ৫৫ শতাংশের।

নিষ্পত্তি হওয়া অভিযোগের মধ্যে ৬২১টি প্রতিষ্ঠান বা ৫ দশমিক ৪০ শতাংশকে জরিমাণা করা হয়েছে, যার অর্থের পরিমাণ ৪৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা।