৩০ টাকা করে বাড়তি দর নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হওয়ায় টিসিবির কার্ডধারীরা ৭০ টাকা দরেই কিনতে পারবেন পণ্যটি।
Published : 07 Mar 2024, 06:50 PM
শিল্প মন্ত্রণালয়ের পর এবার ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার হল। সংস্থাটি জানিয়েছে, আগের দামেই পণ্যটি কিনতে পারবেন ক্রেতারা। ফলে কার্ডধারীরা কেজিপ্রতি কিনতে পারবেন ৭০ টাকা করে।
এ নিয়ে রোজার আগে আগে চিনি নিয়ে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি সরকারি সংস্থার সিদ্ধান্ত পাল্টানো হল।
বুধবার টিসিবি চিনির দাম ৩০ টাকা বাড়িয়ে ১০০ টাকা নির্ধারণ করেছিল। বৃহস্পতিবার সকালে সংস্থাটির মুখপাত্র হুমায়ূন কবির এক অডিও বার্তায় সেই বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানান।
পরে তেজগাঁওয়ের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে ফ্যামিলি কার্ডধারীদের মধ্যে টিসিবি পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করতে এসে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটো বলেন, “টিসিবির চিনি আগের দামে বিক্রি হবে, দাম বাড়ানো হবে না। চিনির পর্যাপ্ত মজুদ আছে। বাজারে চিনির কোনো সংকট হবে না।”
চট্টগ্রামে বৃহৎ চিনি পরিশোধন প্রতিষ্ঠান এস আলমের গুদামে আগুনে বিপুল পরিমাণ চিনি পুড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “এ কারণে বাজারে কোনো প্রভাব পড়ার কথা না। বাজারে পর্যাপ্ত চিনির সরবরাহ আছে। যদি কোনো মিল দাম বাড়ায় বা যোগসাজশ করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।”
চিনির দাম বাড়িয়ে প্রত্যাহারের ঘটনা গত ২২ ফেব্রুয়ারিও ঘটেছি। সেদিন এই কাজ করেছিল শিল্প মন্ত্রণালয়। তারা সরকারি চিনির দাম কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়ে দাম ১৪০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল মন্ত্রণালয়।
রোজার ২০ দিন বাকি থাকতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার মুখে কয়েক ঘণ্টা পরেই আরেক বিজ্ঞপ্তিতে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান এই বিজ্ঞপ্তিটি দেন রাতে। তাতে বলা হয়, “রমজান মাসে ও জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে সরকার। ফলে পূর্বের নির্ধারিত কেজি প্রতি সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৪০ টাকা বহাল রইল।”
চিনির বাজার গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরেই অস্থির। এই সময়ে দাম ৫০ টাকার ঘর থেকে দেড়শ ছুঁই ছুঁই হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দর বৃদ্ধি, ভারতের রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর এই ঘটনাটি ঘটেছে।
তবে রোজা উপলক্ষ্যে ভারত থেকে সরকার ৫০ হাজার টন চিনি আমদানি করতে যাচ্ছে। প্রতিবেশী দেশটির সরকার এরই মধ্যে এই অনুমোদন দিয়েছে।
হালনাগাদ হচ্ছে কার্ডধারীদের তালিকা
টিসিবি কার্ডধারীদের তালিকা জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে হালনাগাদ হচ্ছে বলেও জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। বলেন, “আগামীতে টিসিবিও ডিলারশিপ স্থায়ী করা হবে, আর যাতে মানুষের দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কষ্ট করতে না হয়, কার্ডধারীরা সুবিধাজনক সময়ে এসে নিতে পারে।
সাধারণত, টিসিবির পণ্য বিক্রি করার জন্য দুই বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে ডিলার নিয়োগ করা হয়। নির্দিষ্ট সময় পর পর আবেদনের ভিত্তিতে ডিলারশিপ নবায়ন করা হয়।
সরকারি চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার
বাজার ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। বলেন, “পণ্যের সরবরাহ লাইনে ত্রুটিমুক্ত করা হবে।”
এবার কী কী পণ্য পাবেন কার্ডধারীরা
এই ধাপে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীরা প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১০০ টাকায়, প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকায়, মসুর ডাল ৬০ টাকায়, খেজুর ১৫০ টাকায় ও ৩০ টাকায় চাল পাবেন।
টিসিবির চেয়ারম্যান মো. আরিফুল হাসান, অতিরিক্ত পরিচালক আবুল হাসনাত চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।