ত্বক নিয়ে ঝামেলায় পড়ার অভিজ্ঞতা থেকে এগারটন বুঝতে পারেন, মেকআপ তোলা আসলে রুটিন কাজের মত।
Published : 30 Mar 2023, 09:30 AM
কৈশরে ব্রণ সমস্যায় নাজেহাল হয়েছিলেন ক্লো এগারটন; এখন তিনিই রূপচর্চার পণ্যের পসরা নিয়ে হয়েছেন উদ্যোক্তা।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইংল্যান্ডের টেলফোর্ড শহরের ক্লো এগারটন এখন ২২ বছরের তরুণী। ফ্লসি টুলস নামের এক কোম্পানির মালিক তিনি।
মাইক্রোফাইবার দিয়ে বানানো গ্লাভস বিক্রি করছে ফ্লসি টুলস, যা মুখের প্রসাধনী তুলতে কাজে দেয়।
ফ্লসি টুলসের পণ্যের অধিকাংশ অর্ডার আসে টিকটক থেকে। ঘর থেকেই ব্যবসা সামাল দিচ্ছেন এই তরুণী।
নিজের ব্রণ বিড়ম্বনার কথা জানিয়ে ক্লো এগারটন বিবিসিকে বলেছেন, স্কুলের সহপাঠীরা তার সঙ্গে কেমন আচরণ করত, এখনও ভোলেননি তিনি।
মাধ্যমিকে পড়ার সময় তাকে ‘পিৎজা ফেইস’ সহ আরও অনেক নামে ক্ষ্যাপানো হত। মুখে ব্রণের দাগ ঢাকার জন্য স্কুলে পড়ার সময় থেকেই মেকআপ বেছে নেন এগারটন।
“শিক্ষকরা অনেক সময়ই এতে ভুল বুঝতেন। খারাপ ব্যবহারও করতেন এত কম বয়সে এভাবে মেকআপ করে আসার জন্য।
“আমি আমার চেহারা লুকাতে চাইতাম। কিন্তু বাকিরা সংকীর্ণ মনের ছিল। তারা বুঝতেও চাইত না কেন আমার মুখে এমন দাগ।”
ক্লো এগারটন ঘন ঘন চিকিৎসকের কাছে যেতেন। ব্রণ শুধু মুখে নয়, তার বুক ও ঘাড়েও ছড়িয়ে পড়েছিল।
চিকিৎসক তাকে কড়া ডোজের ওষুধ দেন। এর সঙ্গে গর্ভনিরোধ পিল বদলে ফেলার পর এগারটেনের ত্বক সেরে উঠতে থাকে।
ত্বক নিয়ে এই ঝামেলায় পড়ার অভিজ্ঞতা থেকে এগারটন বুঝতে পারেন, মেকআপ তোলা আসলে রুটিন কাজের মত। কিন্তু তৈলাক্ত মেকআপ রিমুভার ও ওয়াইপ দিয়ে নিজের স্পর্শকাতর ত্বক মোছার সময় তেল চিটচিটে অনুভূতি খুব অপছন্দের ছিল এগারটনের।
”মেকআপ তোলার সময় মুখে আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ত সেসব। তাছাড়া সেগুলো পরিবেশের জন্যও ভালো নয়”, বলেন তিনি।
এগারটন ভাবলেন, এমন কিছু তিনি বানাবেন, যা পরিবেশবান্ধব এবং শুধু পানি দিয়েই মেকআপ তোলায় কাজ করবে।
তার ব্যবসা ফ্লসি লিপ গড়ার কাজ শুরু হয় ২০২১ সালে।
একটি কাগজে কিছু সাদামাটা নকশা এঁকে প্রস্তুতকারকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এগারটন।
হাত গলিয়ে পরা যায় এমন একটি মাইক্রোফাইবার গ্লাভস নকশা করেছিলেন এই তরুণী; যা তার ভাষ্যে ব্যবহারকারীকে মেকআপ তোলার সময় চটপটে করে তোলে।
তিনি বলেন, “আমি কিছু নমুনা সংগ্রহ করি। কয়েক সপ্তাহ ধরে সেগুলো পরখ করে দেখি।
”এই নমুনাগুলো মুখের মেকআপ কতটা তুলে আনতে পারে তাই দেখতে চেয়েছিলাম আমি। এগুলো ছিঁড়ে যাক এমনটা চাইনি।”
নিজের পণ্যের বিপণনে টিকটক ও ইনস্টাগ্রামে পুরোপুরি ভরসা করেছিলেন এই তরুণ উদ্যোক্তা।
পণ্য নিয়ে ভালো প্রতিক্রিয়াগুলো ছিল তার ব্যবসার প্রসারের বড় সম্বল। তবে আমেরিকা থেকে পাওয়া একটি বাজে মন্তব্য তাকে এই ক্ষুদ্র ব্যবসা দাঁড় করানোর যুদ্ধে উৎসাহ যুগিয়েছে।
এগারটন জানান, তার পণ্য বিদেশে বিক্রি না হলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে।
সোশাল মিডিয়ায় ভিডিও পোস্ট করে গ্রাহকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রক্ষা করেন এই উদ্যোক্তা। অন্য আরও পণ্যের সঙ্গে এই গ্লাভস কী করে কাজ করে সেসব বিবরণও তুলে ধরেন।
ঘরে থেকে ব্যবসা শুরু করার নানা রকম প্রতিকূলতার মধ্যেও এই অভিজ্ঞতার অনুভূতি তাকে চাঙ্গা করে তোলে।