Published : 25 Aug 2024, 12:51 AM
মূল্যস্তর দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম গত দুই বছরে অন্তত ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে বলে তথ্য দিলেন অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান।
শনিবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন-বিএফডিসিতে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত ‘আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে করণীয় নিয়ে ছায়া সংসদ” বিতর্ক আয়োজন করে।
সেখানে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “গড় মূল্যস্ফীতির হারের মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধি নির্ধারণ করা খুবই কঠিন। ১০০ টাকা মূল্যের একটি জিনিসের দাম এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ টাকা। গড় মূল্যস্ফীতি ১০ থেকে ১২ শতাংশ বলা হলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অন্তত ৫০ শতাংশ বেড়েছে।”
তার ভাষ্য- প্রতি বছরই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরের বছরে যে পরিমাণ বৃদ্ধির হিসাব করা হয়, তা আগের বছরের বাড়তি দাম ধরেই। এতে করে ২০২২ সালে যে জিনিসটির দাম ১০০ টাকা ছিল ২০২৪ সালে ১৫০ টাকা হয়েছে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনটি চাকরিতে কোটা সংস্কারের জন্য শুরু হয়েছিল, তবে অর্থনৈতিক বৈষম্য সব শ্রেণির মানুষকে এই আন্দোলনে নিয়ে আসে।
আইনি ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনি। চাকরি হারানোর ভয় ও রাজনৈতিক প্রভাবকে মেনে নিয়ে অনেক কর্মকর্তাই কাজ করেছেন বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যা কাঙ্ক্ষিত ছিল না। সমাজে আয় বৈষম্য ও বেকারত্ব মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের পেছনে বহুমাত্রিক বৈষম্য ‘টাইম বোমা’ হিসেবে কাজ করেছে।”
“কতিপয় বড় শিল্প মালিকদের হিসাবের তথ্য চাওয়ায় ব্যবসায়ীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। প্রতিষ্ঠান নয়, ব্যক্তির দুনীর্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
ব্যাংকিং খাতের সংস্কার শুরু হওয়ায় এখন আর আমানতকারীদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।
ব্যাংক পরিচালনায় পরিবারতন্ত্র কায়েম হয়েছিল মন্তব্য করে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “বিগত সময়ে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাংক থেকে অর্থ পাচার হয়েছে। বেড়েছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। অন্তর্বতীর্কালীন সরকার ব্যাংকিং খাতসহ অন্যান্য খাতে যে সংস্কার করছে, তাকে টেকসই করতে হলে রাজনৈতিক সরকারকেও দায়িত্ব নিতে হবে।”
প্রতিযোগিতা শুরুর পূর্বে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্র-জনতার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, “আমরা দেখেছি গত দেড় দশকে বিগত সরকার দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে চরমভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। ব্যাংক থেকে নামে বেনামে ঋণ গ্রহণ করে ব্যাংকগুলোকে ফোকলা বানিয়েছে।
ছায়া সংসদ বিতর্কে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী ও বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির বিতার্কিরা রানার্স আপ হয়েছেন।
বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, এস এম মোর্শেদ, হিসাববিদ আব্দুস সাত্তার সরকার, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা ও সাংবাদিক ইকবাল আহসান।