এলএনজি বন্ধে দ্বিমুখী ভোগান্তি, ঘরে-কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট

বৃষ্টি হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা কমে এসেছে; তবুও ঘাটতি দেশজুড়ে, লোড শেডিং দিয়ে পরিস্থিতি সামলাচ্ছে বিতরণকারী কোম্পানিগুলো।

ফয়সাল আতিকজ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2023, 07:22 PM
Updated : 17 May 2023, 07:22 PM

ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে দুইদিন এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকার সময়ে দেশজুড়ে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের সরবরাহ সংকটের তীব্রতা আরেকবার টের পাওয়া গেছে; ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোড শেডিংয়ে তীব্র গরমে যেমন ভুগতে হয়েছে, গ্যাসের অভাবে রান্নার সূচিও হয়েছে এলোমেলো।

টানা তাপদাহের মধ্যে বিদ্যুৎতের যাওয়া আসায় জনজীবনে নিদারুণ দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে গেছে কয়েকটা দিন। বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্যাস না থাকা ও চাপ স্বল্পতায় শিল্প কারখানায় উৎপাদনও হয়েছে বিঘ্নিত। সিএনজির জন্যও ফিলিং স্টেশনে অপেক্ষার প্রহর হয়েছে দীর্ঘ।

মাত্র দুই দিন সাগরে থাকা ভাসমান দুটি টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। এতে বন্ধ রাখতে হয়েছিল অনেক গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। আগে থেকেই গ্যাসের স্বল্পতা, কয়লার অভাব ও সাশ্রয়ী নীতির কারণে ডিজেলচালিত কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়েছিল।

এরমধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রস্তুতি হিসেবে এলএনজি টার্মিনাল দুটি বন্ধ রাখা হয়। এতে সংকট হয়ে ওঠে তীব্র। চট্টগ্রাম নগরীতে বাসাবাড়িতে চুলা জ্বলেনি, অচল হয়েছে অনেক কলকারখানা। এর প্রভাব পড়ে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানেও।

শনি ও রোববারের বিরতির পর সোমবার পুনঃরায় এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়েছে। সরবরাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস সংকটও কিছুটা কমে আসছে। ঝড়বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কমে আসায় বিদ্যুতের চাহিদা কমে এসেছে।

ফলে বুধবারের পরিস্থিতি হচ্ছে, উৎপাদন না বাড়িয়েও লোড শেডিংয়ের তীব্রতাও কমিয়ে আনা গেছে।

পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন) কামরুজ্জামান খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল সচলের মাধ্যমে গ্যাস সংকট অনেকটাই কেটে গেছে। আগে দুটি টার্মিনাল থেকে ৭০০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ করা হলেও এখন একটি থেকেই দিনে ৫৫০ এমএমসিএফডি গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে।

এর মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সচল করতে প্রায় ৩০০ এমএমসিএফডি গ্যাস দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাকি গ্যাস যাচ্ছে শিল্প ও অন্যান্য গ্রাহকের চাহিদা পূরণে বলে জানান তিনি।

পেট্রোবাংলার আরেক কর্মকর্তা জানান, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় টার্মিনালটি স্থাপনের চেষ্টা চলছে। এতে সফল হলে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।

এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হওয়ার আগে দেশীয় কূপ ও এলএনজি মিলিয়ে দিনে মোট ২৮০০ এমএমসিএফডি গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে যুক্ত হচ্ছিল। তবে তখনও কিছু কিছু শিল্প এলাকায় গ্যাস সংকট ছিল বলে শিল্প মালিকদের অভিযোগ।

এলএনজি সংকট শুরুর পর গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে তৈরি পোশাক খাতের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, তবে এর আগেও শিল্প মালিকরা যে খুব বেশি গ্যাস পেতেন বিষয়টি তাও নয়। বিদ্যুতে লোড শেডিং কিছুটা কমে আসলেও গ্যাসের ঘাটতি থেকেই গেছে।

গ্যাসের কারণে শিল্প কারখানা এখনও ভুগছে দাবি করে তিনি বলেন, সরকার গ্যাসের চাহিদা পূরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্যাসের দাম শতভাগেরও বেশি বাড়াল। দাম কার্যকর হলেও গ্যাস কিন্তু আসেনি।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, "ঈদের আগেও গ্যাসের অভাবে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে নারায়ণগঞ্জে একটি ডায়িং কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েকদিন আগে মদনপুরের ১২ জন শিল্পোদ্যোক্তাকে নিয়ে তিতাসের সঙ্গে বৈঠক করলাম গ্যাসের জন্য। তারা গ্যাস দেবে বলেও শেষ পর্যন্ত দেয়নি।”

কারখানার মতো গ্যাসের অভাবে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতেও গাড়ির লাইন দীর্ঘ হচ্ছে। গ্যাসের চাপ কম থাকায় গাড়িতে সিএনজি সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। এতে ঢাকায় স্টেশনগুলোর বাইরে মধ্য রাতেও গাড়ির লম্বা লাইন দেখা যায়।

বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশেনের সাধারণ সম্পাদক ফারহান নূর জানান, এখন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ফিলিং স্টেশনগুলো নিয়ম করে বন্ধ থাকে। এলএনজি সংকট শুরুর পর সারাদেশে গ্যাসের চাপ কমে গেছে। স্টেশনগুলোর উৎপাদন চার ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে।

গ্রামাঞ্চলে সিএনজিচালিত অটোগুলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মাত্র ৬০ থেকে ১০০ টাকার গ্যাস পায়। যদিও তাদের ৩০০ টাকার গ্যাস ভরতি করার সক্ষমতা রয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে খবর পাইনি।

জ্বালানি সংকটে উৎপাদন ব্যাহত

গত ১৯ এপ্রিল রাত ৯টায় ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পেরেছিল পিডিবি, যা ছিল এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। ১৪ মে সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৮৫ মেগাওয়াট। এর অর্থ হচ্ছে ২৫ দিনের মাথায় উৎপাদন সক্ষমতা কমে গেছে প্রায় সাড়ে চার হাজার মেগাওয়াট।

পাওয়ার সেলের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াট উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেলেও কয়লা, গ্যাস ও তরল জ্বালানির সংকটের কারণে সেই রেকর্ড ধরে রাখা যায়নি। ফলে ক্রম বর্ধমান চাহিদা পূরণে লোড শেডিং দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে।

একদিকে গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়া অন্যদিকে কয়লার সংকটের কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে গ্রামে কিংবা শহরে সর্বত্র লোড শেডিংয়ের কবলে পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের। কোথাও কোথাও একই কারণে আবাসিক গ্রাহকদের লাইনেও গ্যাস থাকছে না। এতে গ্যাস-বিদ্যুতের দ্বিমুখী ভোগান্তিতেও পড়ছেন অনেকে।

গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এপ্রিল মে মাস জুড়ে থেমে থেমে লোড শেডিংয়ের তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছিল। এপ্রিলে মাঝামাঝিতে রেকর্ড সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৬০৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেও লোড শেডিংয়ের ভোগান্তি থেকে মুক্তি মেলেনি।

পিডিবির হিসাবে, বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা ১৬ হাজার মেগাওয়াট অতিক্রম করায় সর্বোচ্চ উৎপাদন করেও প্রায় ৫০০ মেগাওয়াটের মতো ঘাটতি থেকে গেছে। এরমধ্যে সময়ে সময়ে উৎপাদন কমে গেলে এ সংকট আরও বেড়ে যায়।

সম্প্রতি বিদ্যুতের চাহিদা কিছুটা কমে আসলেও গত শুক্রবার ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে আমদানি করা এলএনজি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর লোড শেডিং আরও বেড়ে যায়।

এর বাইরে বেশ কিছুদিন ধরে কয়লার অভাবে রামপাল ৬১৭ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন কমে যায়। কয়লা চলে আসায় মঙ্গলবার রাত থেকে কেন্দ্রটি চালু হয়েছে। বুধবার রাত ৯টার দিকে ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত উৎপাদন করছিল এটি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবারের তথ্য দিয়ে পিডিবির সদস্য ওয়াজেদ আলী বলেন, উৎপাদন পরিস্থিতি আগের মতোই। তবে রাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা কমে এসেছে। লোড শেডিংয়ের পরিমাণও কমে গেছে।

"পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে আমরা দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করছি। তবে মনে হচ্ছে আরও অন্তত এক সপ্তাহ লেগে যাবে।"

বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিস্থিতি কেমন

পাওয়ার সেলের হিসাবে দেশে এখন ২৭ হাজার ৩৬১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। অবশ্য এর সঙ্গে ভারত থেকে আমদানি করা ১১৬০ মেগাওয়াট ও আদানির ঝারখণ্ড গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আসা ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রয়েছে।

গত ১৫ মে দিনে সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৯৮৪ মেগাওয়াট ও রাতে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেছে। মঙ্গলবার দিনে ১২ হাজার ২০০ ও রাতে ১৪ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা ছিল। ফলে দৈনিক ২২০০ থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি থাকছে, যা লোড শেডিং দিয়ে মেটানো হচ্ছে।

পিডিবির মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সচল ১৫৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে গ্যাসভিত্তিক রয়েছে ৫৯টি। এর মধ্যে গ্যাসের স্বল্পতার কারণে বড় বড় ১৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ বা কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন কমে এসেছে।

বন্ধ কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে সামিটের ৩৩৫ মেগাওয়াট মেঘনাঘাট বিদ্যুৎকেন্দ্র, ইজিসিবির ৩৩৫ মেগাওয়াট সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ২১০ মেগাওয়াট সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র, পিডিবির টঙ্গী ১০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, রিজেন্টের ঘোড়াশাল ১০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, পিডিবির চট্টগ্রাম টিপিপি-১ ২১০ মেগাওয়াট ও চট্টগ্রাম টিপিপি-২ ২১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আশুগঞ্জ ৪৫০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (সাউথ)।

তবে ভারতে অবস্থিত আদানি পাওয়ারের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৩৯২ থেকে ৪০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ আসছে।

অপরদিকে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় রয়েছে কয়লাভিত্তিক তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র যেগুলোর মোট উৎপাদন সক্ষমতা ৪৪৪ মেগাওয়াট। এখানেও কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে আছে ৮৫ মেগাওয়াটের একটি ইউনিট।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের আগের দিন ১৩ মে সর্বনিম্ন ৯ হাজার ৭৬৬ মেগাওয়াট থেকে ১২ হাজার ৩৪৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গিয়েছিল। যদিও দিনের সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল ১৪ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট।

ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে যাওয়ার দিন ১৪ মে চাহিদা দেখানো হয়েছিল ১২ হাজার ৭৩২ মেগাওয়াট। তবে উৎপাদন করা গিয়েছিল ৯ হাজার ৬১৬ মেগাওয়াট থেকে সর্বোচ্চ ১১ হাজার ২৫ মেগাওয়াট। ঝড় চলে যাওয়ার দুইদিন পর মঙ্গলবার উৎপাদন ছিল ১০ হাজার মেগাওয়াট থেকে ১১ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে।

পিডিবির সদস্য ওয়াজেদ আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল হয়ে দৈনিকে ৬৫০ থেকে ৭০০ এমএমসিএফডি গ্যাস আসা বন্ধ হওয়ার কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট কমে গেছে।

পিডিবির দৈনিক উৎপাদন প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ১৫ মে দিনের বেলায় সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৯৮৪ মেগাওয়াট ও রাতে ১১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেছে। এক সপ্তাহ আগের চাহিদা বিবেচনা করলে দিনে তিন থেকে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল।

কোথায় কত লোডশেডিং?

পিডিবির হিসাবে চলতি সময়ে সিলেট, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা অঞ্চলে লোড শেডিংয়ের তীব্রতা কম রয়েছে। তবে ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও রংপুর অঞ্চলে লোড শেডিং ছিল বেশি।

তবে বুধবার সারাদেশে ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা কমে এসে লোড শেডিংয়ের তীব্রতাও কমেছে।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কেন্দ্রীয় মনিটরিং কক্ষ থেকে জানানো হয়, মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে পল্লী বিদ্যুতের সবগুলো সমিতিতে দুই হাজার ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল। কোথাও কোথাও ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা করে লোড শেডিং হয়েছে বলে গ্রাহকরা ফোন করে অভিযোগ জানিয়েছেন।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পল্লী বিদ্যুতে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট করে বিদ্যুতের ঘাটতি বা লোড শেডিং থাকছে।

ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে নিয়োজিত ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, কয়েক দিন ধরে ডিপিডিসির বিতরণ এলাকায় প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে। চাহিদা বেড়ে অনেক সময় ১২০০ মেগাওয়াটে উন্নীত হলেও পাওয়া যাচ্ছে ৭০০ মেগাওয়াট থেকে ৮০০ মেগাওয়াট।

একই কথা বলেন ঢাকায় আরেক বিতরণ কোম্পানি ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাউসার আমির আলী।

তিনি জানান, ডেসকোর বিতরণ এলাকায় গড়ে ১১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে।

ঢাকার এই দুই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকই দাবি করেন, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় রাতে বিদ্যুতের চাহিদা কমে গেছে। ফলে উৎপাদন আগের মতো থাকলেও লোডশেডিং কমে এসেছে।