রোজার পণ্য আমদানিতে রিজার্ভ থেকে ডলার চায় এফবিসিসিআই

বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে ডিসেম্বরে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে খেলাপি না করার সুবিধাও চেয়েছে এফবিসিসিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2022, 05:24 PM
Updated : 12 Dec 2022, 05:24 PM

রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধের সময় বাড়ানো, ডিসেম্বরে ঋণের কিস্তি না দিলেও খেলাপি না করার দাবির পাশাপাশি রোজার পণ্য আমদানিতে এলসি খুলতে রিজার্ভ থেকে ডলার সুবিধা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বৈঠকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন এসব নীতি সুবিধা চেয়েছেন।

মতিঝিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ বৈঠকের পর সাংবাদিকদের জসিম উদ্দিন বলেন, ‘‘রমজানকে সামনে রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাইরেও আরও আমদানির চাপ থাকে। অর্থনীতির ৫০ শতাংশই এই রমজানকে ঘিরে চলে। আমরা বলেছি, রিজার্ভ থেকে হলেও ব্যাংকগুলোকে ডলার সহায়তা দিয়ে আপাতত পরিস্থিতি সামাল দিতে।’’

বৈঠকে ইডিএফ থেকে নেওয়া ঋণের মেয়াদ বাড়ানোর দাবির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘শিল্পে গ্যাস সংকট রয়েছে। আমরা নির্ধারিত সময়ে পণ্য তৈরি করে রপ্তানি করতে পারছি না। এই সংকটকালে বলেছি ইডিএফ ঋণ পরিশোধে ১৭০ দিন করার।’’

অপরদিকে ব্যবসায় সংকটের কারণে কেউ ডিসেম্বরে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে খেলাপি না করার সুবিধাও চাওয়া হয় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘‘করোনার সময়ে অর্থনীতি যে অবস্থায় ছিল, আমরা কিন্তু এখনও ভালো নেই। শ্রমিকদের বেতন কোনো মতে দিয়ে চলছি। আমরা দাবি করেছি, শুধু সুদ পরিশোধ করব, কিস্তিুর অর্থ পরিশোধ না করলেও যেনো খেলাপি না করা হয়।’’

বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, ‘‘বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা বেশ কিছু নীতি সুবিধা চেয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছে ইডিএফ ঋণের মেয়াদ আরও ৯০ দিন বর্ধিত করা এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার এক দরে নিয়ে আসার জন্য।“

এ দুই বিষয়ে বিবেচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক পরে জানাবে বলে ব্যবসায়ীদের জানানোর কথা বলেন তিনি।

আমদানিতে রিজার্ভ থেকে ডলার সহায়তার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে অব্যাহতভাবে দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ঋণ পরিশোধে কিস্তিতে ছাড়ের বিষয়টি ‘পর্যালোচনায় রয়েছে’ বলেও জানান মুখপাত্র।

আমদানি-রপ্তানিতে ডলারের একক দর নির্ধারণের বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘‘রপ্তানিকারকরাও পণ্য তৈরিতে আমদানি করে থাকে। আমদানি করা পণ্য দিয়েই রপ্তানি করা হয়। যে দামে পণ্য আমদানি করছে, তার চেয়ে চার-পাঁচ টাকা কমে রপ্তানির ডলার নগদায়ন করছে।’’

বিনিময় হার বাজারের উপর ছেড়ে দেওয়ার পরও বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেইন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ডলারের আলাদা বিনিময় ধার নির্ধারণ করে দিয়েছে।

সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রপ্তানি বিল নগদায়নে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১০০ টাকা, প্রবাসী আয়ে সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা।

অপরদিকে আমদানির এলসি খোলার ক্ষেত্রে বিনিময় হার নির্ধারণ করা হবে রেমিটেন্স ও রপ্তানির বিনিময় হারের গড় করে। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ গড় হারের সঙ্গে অতিরিক্ত ১ টাকা বেশি নিতে পারবে; অর্থাৎ স্প্রেড সীমা হবে ১ টাকা।

এজন্য ব্যাংকভেদে আমদানি পর্যায়ে ডলারের বিনিময় হার ১০৩ থেকে ১০৫ টাকা পর্যন্ত ওঠানামা করে।

ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে দর বেশি রেখে আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে দর একটি রাখার।

বৈঠকে ঋণের সুদের হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ রাখার দাবিও করেন ব্যবসায়ীদের সংগঠনের এ সভাপতি।