চট্টগ্রামভিত্তিক জাহাজ মালিকদের সংগঠন আইভোয়াক মঙ্গলবার রাত থেকে আলাদাভাবে লাইটারেজ জাহাজ পরিচালনার কাজ শুরু করেছে।
Published : 20 Dec 2023, 01:58 PM
লাইটারেজ জাহাজের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল-ডব্লিউটিসি থেকে বেরিয়ে আলাদাভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে ইনল্যান্ড ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব চিটাগাং-আইভোয়াক।
চট্টগ্রামভিত্তিক জাহাজ মালিকদের সংগঠন আইভোয়াক মঙ্গলবার রাত থেকে আলাদাভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ নৌরুটে লাইটারেজ জাহাজ পরিচালনার কাজ শুরু করে। এর মধ্য দিয়ে প্রায় কুড়ি বছর ধরে কার্যক্রম চালিয়ে আসা ডব্লিউটিসি আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে গেল।
নতুন সংগঠনের নেতারা বলছেন, ডব্লিউটিসিতে সকল কোম্পানির ‘সমঅধিকার’ বাস্তবায়ন না করা, আমদানিকারকদের নানা অভিযোগের সমাধান না হওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণেই ডব্লিউটিসি থেকে বের হয়ে আলাদাভাবে কার্যক্রম শুরু করেছেন তারা।
নগরীর একটি হোটেলে এ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। প্রথম দিনে বরাদ্দপত্র দেওয়া হয় বিসমিল্লাহ মেরিন নেভিগেশনের মালিকানাধীন ‘এমভি জেএএফ কন্টেইনার-১’ লাইটারেজ জাহাজকে। বর্হিনোঙ্গরে অবস্থান করা একটি বড় জাহাজ থেকে ৭০০ টন সয়াবিন বীজ নিয়ে নারায়ণগঞ্জের কাচপুরে যাবার কথা রয়েছে এ লাইটার জাহাজের।
বিভিন্ন দেশ থেকে সমুদ্রপথে মাদার ভ্যাসেলে (বড় আকারের জাহাজ) করে আমদানি করা পণ্য চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরিবহন করা হয় লাইটারেজ জাহাজে করে। এতদিন জাহাজ মালিকদের তিনটি সংগঠন নিয়ে গঠিত ডব্লিউটিসি এ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করত। আমদানিকারকদের চাহিদার বিপরীতে লাইটারেজ জাহাজ বরাদ্দের কাজটি করত এই সেল।
২০০৩ সালে বাংলাদেশ কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন-বিসিভোয়া, ইনল্যান্ড ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব চিটাগাং-আইভোয়াক এবং কোস্টাল ভ্যাসেল ওনার্স এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন মিলে ডব্লিউটিসি গঠন করে। দেড় হাজারের মত লাইটারেজ জাহাজের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে ডব্লিউটিসি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করত।
তবে আইভোয়াক নেতাদের দাবি, চট্টগ্রাম থেকে অভ্যন্তরীণ নৌরুটে পণ্য পরিবহন করে থাকে নয়শ থেকে এক হাজারের মত লাইটারেজ জাহাজ।
আইভোয়াকের মুখপাত্র পারভেজ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাহাজ মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ, অভ্যন্তরীণ রুটে ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে রাখাসহ শৃঙ্খলা আনতে কুড়ি বছর আগে ডব্লিউটিসি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু সকল সংগঠন ও সদস্যের স্বার্থ রক্ষা না করা, আমদানিকারকদের ক্ষতিপূরণ যথাযথভাবে সম্পন্ন না করা, জাহাজ মালিকদের ট্রিপ দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্যসহ নানা অভিযোগ আমাদের ছিল।”
ডব্লিউটিসিকে কিছু মালিক তাদের নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে আসছিল অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমরা চট্টগ্রামের কয়েকজন মন্ত্রী ও সিনিয়র লোকজনের সাথে কথা বলেছি। সকলের সাথে পরামর্শ করে সংস্থাটি থেকে বেরিয়ে এসে নতুন উদ্যোগ নিয়েছি।”
এ বিষয়ে ডব্লিউটিসির নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বকেয়া টাকা পরিশোধ না করার কারণে তারা ডব্লিউটিসি থেকে বেরিয়ে গেছে। এতে স্বাভাবিক কার্যক্রমে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।”