ঢাকায় নয় হাজার পরিবারের কাছে মঙ্গলবার থেকে খোলা ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হবে।
Published : 13 Nov 2023, 11:16 AM
ফ্যামিলি কার্ড ছাড়াও ঢাকায় খোলা ট্রাক থেকে কম দামে দুই কেজি করে ডাল, আলু ও পেঁয়াজ এবং দুই লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি করা হবে।
মঙ্গলবার থেকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ২৫ থেকে ৩০টি ট্রাকে করে এসব পণ্য বিক্রি শুরু হবে এবং পর্যায়ক্রমে এর আওতা বাড়ানো হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানিয়েছেন।
সচিবালয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সচিব জানান, খোলা ট্রাক থেকে ৬০ টাকা কেজিতে ডাল, ৩০ টাকায় আলু, ৫০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ এবং ১০০ টাকা লিটার দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হবে।
ঢাকায় নয় হাজার পরিবারের কাছে মঙ্গলবার থেকে খোলা ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হবে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, “যে কেউ এসব পণ্য কিনতে পারবেন। আমরা এসব পণ্যের সংগ্রহ বাড়াতে পারলে বিক্রির আওতাও বাড়ানো হবে।
“ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের বাইরে এসব পণ্য দেওয়া হবে। প্রত্যেক ট্রাকে ৩০০ জনকে দেওয়ার মত পণ্য থাকবে।”
আপাতত শুক্র ও শনিবার ঢাকায় খোলা ট্রাক থেকে পণ্য বিক্রি বন্ধ থাকবে জানিয়ে তপন কান্তি বলেন, পরে সব দিনই এ কর্মসূচি চলবে। একেক দিন ঢাকার একেক স্পটে এসব পণ্য বিক্রি করা হবে।
“ঢাকা শহরে যেহেতু অনেক মানুষের চাপ, দ্রব্যমূল্য একটু বেশিই থাকে। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পণ্য আসে, পরিবহন ব্যয়টা যোগ হয়, সব মিলিয়ে দামটা একটু বেশিই থাকে। সেজন্য খোলা ট্রাক থেকে কম দামে পণ্য বিক্রি করা হবে। যে কেউ এসব পণ্য কিনতে পারবেন।”
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৩ লাখ মানুষের টিসিবি কার্ড আছে জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, সারা দেশে টিসিবি কার্ডধারী এক কোটি পরিবার গত বছরের মার্চ মাস থেকে তিনটি পণ্য পাচ্ছে। গত জুলাই থেকে পাঁচ কেজি করে চালও দেওয়া হচ্ছে।
বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও ডলারের বিনিময় হারের দাম বেড়ে যাওয়ায় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে বলে দাবি করেন বাণিজ্য সচিব।
বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক বাজারের দাম বাড়া-কমার ওপর তেল-চিনির দাম সমন্বয় করা হয়। আলুর দাম নির্ধারণ করে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করি, কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে সফল হইনি। তখন আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে আলু ও ডিম আমদানি উন্মুক্ত করে দিয়েছি।”
সচিব জানান, সোমবার পর্যন্ত ১০ হাজার ৯৫ টন আলু আমদানি হয়েছে। ২ লাখ টন আলুর আমদানির অনুমতি দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৫ হাজার টন আলু আমদানির এলসি খোলা হয়েছে। ২৫ কোটি ডিম আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ৬২ হাজার ডিম আমদানি হয়েছে।
“আমাদের উদ্দেশ্য ডিম আমদানি না, ডিমের দাম কমানো। দাম করে গেলে আমদানি কম হলেও অসুবিধা নেই। তবে বাজার স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত আলু ও ডিম আমদানি হবে।”
বাণিজ্য সচিব বলেন, “ডিম ও আলু আমদানি হওয়ায় উল্লেখযোগ্য ফল আমরা পেয়েছি। ডিমের দাম অনেক কমে গেছে, আলুর দামও কমেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে রোববার নির্দেশনা গেছে, কোল্ড স্টোরেজ থেকে ২৭ টাকা কেজিতে আলু বিক্রির বিষয়টি বাস্তবায়ন করা হবে।
“জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কোল্ডস্টোরেজ থেকে আলু বের হবে। এরপর ওই আলু যেন বাজারে ৩৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়, সেখানেও জেলা প্রশাসনের নজরদারি থাকবে, ভোক্তা অধিকার সংস্থাও কাজ করবে।”
টিসিবি কার্ডধারীদের এখন আলু দেওয়া হবে না জানিয়ে বাণিজ্য সচিব বলেন, জেলা প্রশাসকরা সোমবার থেকে সরকারি দাম অর্থাৎ ৩৬ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি নিশ্চিত করবেন।
তেল, চিনি, ডাল, আলু এসব পণ্য আমদানি করতে যেন ডলারের সমস্যা না হয়, সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান সচিব।