ঈদের পর এ সংক্রান্ত দুই কমিটি বৈঠক করে সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রস্তাব দেবে।
Published : 16 Apr 2023, 11:38 PM
পোশাক শিল্পের বাইরে রপ্তানিমুখী সিরামিক শিল্প ও সিমেন্ট শিল্পের শ্রমিকরাও সরকার নির্ধারিত মজুরি কাঠামোর আওতায় আসছেন।
চলতি বছরের শুরুতে নিম্নতম মজুরি বোর্ড এ বিষয়ে দুটি কমিটি গঠন করে, যেসব কমিটি ইতোমধ্যে দুটি করে বৈঠক করেছে।
কমিটির সংশ্লিষ্ট একাধিক সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, শ্রমিকদের সম্ভাব্য মজুরি প্রস্তাব নিয়ে ঈদের পর বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকের পর সরকারের কাছে চূড়ান্ত প্রস্তাব দেওয়া হবে।
নিম্নতম মজুরি বোর্ডের অধীনে বর্তমানে ৪২টি শিল্পখাত রয়েছে, যারা সরকার নির্ধারিত বেতন কাঠামো অনুযায়ী মজুরি পেয়ে থাকেন। ৫ বছর পরপর বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় এসব খাতের মজুরি বৃদ্ধি ঘটে থাকে।
সিমেন্ট শিল্প বাংলাদেশের পুরোনো একটি শ্রমখাত হলেও তুলনামূলক নতুন শিল্প হিসেবে বিস্তার ঘটছে সিরামিক শিল্পের। দুটি পণ্যই এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব জাহেদী হাসান চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মালিক পক্ষের আগ্রহেই এই মজুরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিদেশি ক্রেতাদের কাছে কমপ্লায়েন্স ইস্যুর কারণে মালিকরা প্রতিষ্ঠানিক মজুরি কাঠামো অনুযায়ী বেতন দিতে আগ্রহী। যদিও সিরামিক শিল্পে অন্যান্য ভারী শ্রম নির্ভর শিল্পের চেয়ে তুলনামূলক বেশি মজুরিই দেওয়া হয়।
“ইতোমধ্যেই মিটিং শুরু হয়েছে। রোজা আসায় কাজ থেমে আচ্ছে। একটি প্রস্তাব তৈরির জন্য বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
সিরামিক খাতে ৬০ হাজার বেতনভুক্ত শ্রমিক কর্মরত আছেন বলে জানান তিনি।
আর সিমেন্ট শিল্পে নিয়মিত বেতনভুক্ত শ্রমিক আছেন ৪০ হাজার। এ শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় দুই লাখ শ্রমিক আছেন বলে জানিয়েছেন মেট্রোসেম সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদ উল্লাহ।
তিনি বলেন, “আমাদের চলমান প্র্যাক্টিস হচ্ছে- অন্যান্য যে কোনো খাতের চেয়ে এখানে বেশি মজুরি দেওয়া হয়। এই খাতে সাড়ে সাত হাজার টাকায় একজন অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি শুরু হয়। তারপর ধীরে ধীরে তা দক্ষতা অনুযায়ী বাড়তে থাকে।
“শ্রমিক পর্যায়ে ২০/২৫ হাজার টাকাও বেতন দেওয়া হয়। এখন যেই মজুরি কাঠামো গঠিত হচ্ছে, সেখানে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ঠিক করে দেওয়া। এর মধ্যে কেউ চাইলে বেশি মজুরিও দিতে পারবে।”
নিম্নতম মজুরি বোর্ডের নোটিসে দেখা যায়, আগামী ২২ মে সিরামিক ও সিমেন্ট- দুই কমিটিরই তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে খসড়া মজুরি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে।
সিমেন্ট শিল্পের নিম্নতম মজুরি কমিটিতে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিত্ব করছেন মেট্রোসেম এমডি শহীদ উল্লাহ।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারনে গঠিত কমিটি কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে কয়েকটা মিটিং হয়েছে। ঈদের পর বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।”
বর্তমান মজুরি কাঠামো সম্পর্কে শহীদ উল্লাহ বলেন, “এইখাতে অনেক দেশীয় কোম্পানি ও মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি আছে। এদের একেকটির মজুরি কাঠামো একেক রকম। এগুলোকে একটা সমীকরণ করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”
দুটি মজুরি কমিটিতেই রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের উপ মহাসচিব মকসুদ বেলাল সিদ্দিকী। জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ।
এর বাইরে সিরামিক শিল্পে সিলেটের খাদিম সিরামিক ওয়ার্কার্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মনির আলী ও সিমেন্ট শিল্পের কমিটিতে মেঘনা সিমেন্ট মিলস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবুল বাশার মুন্সি রয়েছেন।