“বেশ কিছু জমি আমরা চিহ্নিত করেছি। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবি নিজেরা সার্ভে করেছে। এসব জমি উন্নয়নের জন্য তারা অর্থায়ন করবে,” বলেন তিনি।
Published : 04 Jul 2024, 11:48 PM
ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন ও সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক দামে নতুন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়ার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এ তথ্য দেন তিনি।
বর্তমানে ৪০০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সৌর প্রকল্প থেকে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে। ২৬ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতা ও ১০ শতাংশ সৌরবিদ্যুতের পরিকল্পনা সমন্বয় করতে হলে দৈনিক ২৬০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা প্রয়োজন।
তবে সরকার গত কয়েক বছরে যেসব সৌর প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে, সেখানে বিদ্যুতের ইউনিটপ্রতি মূল্য অনেক বেশি বিবেচনা করা হয়েছে বলে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অনাবাদি চরের ৬৫০ একর জমিতে গড়ে উঠা দেশের সর্ববৃহৎ (২০০ মেগাওয়াট) সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে প্রতি ইউনিট ১৫ সেন্ট বা ১৬ টাকা ৬০ পয়সা দরে কেনার ২০ বছর মেয়াদি চুক্তি হয়েছে।
পাবনার হেমায়েতপুরে ১০০ মেগাওয়াটের প্যারামাউন্ট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কেনা হচ্ছে প্রতি ইউনিট ১১ দশমিক ৯ সেন্ট বা ১৩ টাকা ০৯ পয়সায়।
বাগেরহাটের মোংলায় ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে ওরিয়ন গ্রুপ, যেখানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ সেন্ট।
সবশেষ গত জুনে জামালপুরের মাদারগঞ্জে জি-টু-জি ভিত্তিতে চীনের সিআরইসি ও বাংলাদেশের বিআর পাওয়ারজেন কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে ১০০ মেগাওয়াট একটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়, যেখানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ধরা হচ্ছে ১১ সেন্ট বা ১৩ টাকা।
অবশ্য সম্প্রতি ইউনিটপ্রতি ১১ টাকা দরে কয়েকটি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদনও দিয়েছে সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ কেনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে অন্তত ছয় হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতা সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসা। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, এডিবি নিজেরা সার্ভে করেছে। বেশ কিছু জমি আমরা চিহ্নিত করেছি। তারা সম্মতি দিয়েছে, এসব জমি উন্নয়নের জন্য তারা অর্থায়ন করবে। এগুলো উন্নয়নের পর আমরা টেন্ডার করব। এখন যে দামে সৌরবিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে, সেখানেও কিছুটা সাশ্রয় হতে পারে।
“আমরা প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুতের অনুমোদন দিয়ে দিয়েছি, যা এ বছরের শেষ দিকে চলে আসবে। আরও ছয় হাজার মেগাওয়াটের বেশি আছে পাইপলাইনে। জমি অধিগ্রহণ পর্যায়ে আছে। এগুলো সব বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ। নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।”
নসরুল হামিদ বলেন, “আমরা ময়মনসিংহের একটা বৃহৎ অঞ্চল নিয়ে কাজ করছি। আরও ২০ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করব। সরকার ট্রান্সমিশন লাইনও করে দেবে। সোলারের জমিতে কীভাবে চাষাবাদ করা যায়, সেটাও ভাবছি।”
১০ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বায়ু বিদ্যুতেরও একটা ভালো অবস্থান থাকবে বলে আশাবাদী প্রতিমন্ত্রী।
“নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে আমরা একটা বড় অবস্থান নিয়েছি। আমাদের টার্গেট হচ্ছে রিনিউয়েবল থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ নিয়ে আসা। কক্সবাজারের খুরুশকুল প্রকল্প সফল হওয়ার পর বায়ু বিদ্যুৎ নিয়েও আমরা আশাবাদী। অগভীর সমুদ্রে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ করার জন্য প্রি-ফিজিবিলিটি শেষ হয়েছে। এখন ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি চলছে। সব কিছু ঠিক থাকলে বাতাস থেকেই ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে,” বলেন তিনি।