এত আকর্ষণীয় দেশ, অথচ এফডিআইয়ে পিছিয়ে: এডিবি কান্ট্রি ডিরেক্টর

অবকাঠামো, যোগাযোগক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি দক্ষ লোকবল তৈরিতে মনোযোগী হতে বলেছেন এডিমন জিনটিং।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2023, 02:51 PM
Updated : 29 Jan 2023, 02:51 PM

অগ্রগতির ধারা বজায় রাখতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন জিনটিং।

সোমবার ঢাকার অ্যামেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে জিডিপির অনুপাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) পরিমাণ এক শতাংশেরও কম। এত আকর্ষণীয় দেশ, অথচ এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে খুবই পিছিয়ে।”

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের সবশেষ প্রতিবেদন সেই সুখবরই দিয়েছে বৃহস্পতিবার। ২০২১ সালে এফডিআই এসেছে প্রায় ২৯০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি। অবশ্য মহামারীর কারণে আগের বছর সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ পড়ে গিয়েছিল, বাংলাদেশে এসেছিল ২৮৯ কোটি ৬০ লাখ ডলারের বিনিয়োগ।  

অ্যামচেমের মতো সংগঠন এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে কাজ করছে মন্তব্য করে এডিমন জিনটিং বলেন, “স্থানীয় পর্যায়ের বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও প্রতিযোগিতার পরিবেশ থাকতে হবে, যাতে রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হয়। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য অনেক কিছু করার রয়েছে, যাতে বিনিয়োগ আসে এবং স্থানীয় বিনিয়োগের পরিপূরক হিসাবে কাজ করতে পারে।”

অনুষ্ঠানে ‘উদ্ভূত বৈশ্বিক বাস্তবতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের সামষ্টিক-অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি’ বিষয়ে বক্তৃতা দেন জিনটিং।

তার বক্তৃতা শেষ হলে ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনা করে এফডিআইয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের করণীয় সম্পর্কে জানতে চান দর্শকসারির একজন।

উত্তরে জিনটিং বলেন, অবকাঠামোসহ বিনিয়োগের অন্যান্য শর্তের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে বিদেশিদের আকর্ষণের জন্য বিনিয়োগ নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে ভিয়েতনাম সরকার। পাশাপাশি তার মানবসম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে নজর দিয়েছে।

“অবকাঠামো, যোগাযোগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নয়নের পাশাপাশি এগুলোর জন্য লোকবলও দরকার। সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।”

বাংলাদেশে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় অগ্রগতির জন্য শিক্ষার গুণগত মান ও দক্ষতার উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন জিনটিং।

বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারে সরকারের সঙ্গে অংশীদার হিসাবে কাজ করতে এডিবি প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার জন্য অর্থনৈতিক খাতেও বড় ধরনের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন এডিবির এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “ব্যাংকিং খাতে সমন্বিত ও সামগ্রিক সংস্কার দরকার; যার মধ্যে থাকবে খেলাপি ঋণ সমস্যার সমাধানের ব্যবস্থাপনাও।”

পরিচালনায় সক্ষমতার অভাব, অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা ও উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকিং খাত পুরোপুরি উন্নতি লাভ করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের সহসভাপতি ও মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাউন্সিলর স্কট ব্র্যান্ডন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।