কালো টাকা সাদা করার সুযোগ এবার অনেক ক্ষেত্রে

করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে অর্থনীতির মূল স্রোতে অর্থ প্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে আয়কর অধ্যাদেশে দুটি ধারা সংযোজনের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী, যাতে ঢালাওভাবে ‘কালো টাকা’ সাদা করার সুযোগ হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2020, 12:09 PM
Updated : 12 June 2020, 03:53 PM

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন, সেখানেই এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, “দেশের প্রচলিত আইনে যা-ই থাকুক না কেন আগামী ১ জুলাই ২০২০ থেকে ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাগণ আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত জমি, বিল্ডিং, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্টের উপর প্রতি বর্গমিটারের উপর নির্দিষ্ট হারে এবং গচ্ছিত অর্থ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড বা অন্য কোনো সিকিউরিটিজের উপর ১০ শতাংশ কর দিয়ে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করলে আয়কর কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না।”

এর পাশাপাশি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করে তিনি বলেন, “অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্যতম চালিকাশক্তি পুঁজিবাজারকে গতিশীল করতে তিন বছরের লক-ইনসহ কতিপয় শর্তে আগামী ১ জুলাই ২০২০ থেকে ৩০ জুন ২০২১ পর্যন্ত ব্যক্তি শ্রেণির করদাতা পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগ করলে এবং উক্ত বিনিয়োগের উপর ১০ শতাংশ কর দিলে আয়কর কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করতে পারবে না।”

এর আগে আয়কর অধ্যাদেশে নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট কেনা এবং দালান নির্মাণে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ ছিল। বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়।

এখন থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের পাশাপাশি ১০ শতাংশ কর দিলেই অবৈধ অর্থের বিষয়ে আরও কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে না।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, “করোনাভাইরাসজনিত সংকটের কারণে পরিবর্তিত অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনা এবং মানুষকে নতুনভাবে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা সময়ের দাবি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দারও পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরে আমাদের অত্যন্ত বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার সাথে রাজস্ব নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।”

‘অস্বাভাবিক সময়ে অস্বাভাবিক পদক্ষেপের’ প্রয়োজন হয় মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, অর্থনীতির মূল স্রোতে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়কর অধ্যাদেশে এই দুটি ধারা সংযোজনের প্রস্তাব করছেন তিনি।