ফুল বিক্রি করে যে টাকা আয় হয়, তা দিয়েই চলে শারমিন ও তার মায়ের ।
Published : 23 Oct 2022, 06:01 PM
বগুড়া শহরের মাঠ, ফুটপাত অথবা পার্কে ঘুরে ঘুরে কালো বালতিতে করে ফুল বিক্রি করতে দেখা যায় শারমিনকে। বয়স মাত্র ১৪ বছর। এই বয়সেই কাঁধে তুলে নিয়েছে সংসারের ভার। বয়সে ছোট বলে কাজের কোনো হেরফের নেই। বড়দের মতোই কাজ করে চলেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শারমিনের সাথে তার বয়সী আরও ছেলেমেয়ে একসাথে ফুল বিক্রি করছে। কাউকে দেখা মাত্রই দৌড়ে গিয়ে ফুল নেওয়ার জন্য জোড় করতে থাকে। অনেকেই ফুল কেনেন, আবার অনেকেই এড়িয়ে যান।
বগুড়া শহরের রেলস্টেশন এলাকার বস্তিতে মাকে নিয়ে ভাড়া থাকে শারমিন।
সংসারে কে কে আছে তা নিয়ে শারমিন জানালো, তার বাবা নেই। মা থাকলেও অসুস্থতার কারণে কাজ করতে পারে না।
আর তাই খাবার জোগাতে এবং অর্থ উপার্জনে ফুল বিক্রি করতে বেরিয়ে পড়তে হয় শারমিনকেই। ফুল বিক্রি করে যে টাকা আয় হয়, তা দিয়েই চলে তাদের সংসার।
ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিশু শ্রমের সাথে জড়িত আছে ১৭ লাখ শিশু। প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের বয়স ৬ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। এদের বেশিরভাগই ছেলে শিশু।
জাতীয় পর্যায়ের শিশু সংগঠন ন্যাশনাল চিলড্রেনস্ টাস্ক ফোর্স (এনসিটিএফ) বগুড়া জেলা ভলেন্টিয়ার সঞ্জু রায় বলেন, ”শিশুশ্রম বাংলাদেশের বৃহৎ একটা সমস্যা। এর মূল কারণ হলো দারিদ্র্যতা।
”শিশুশ্রমের সঙ্গে যুক্ত শিশুরা সুবিধাবঞ্চিত। কেউ এতিম, কারোর বাবা-মা থাকলেও কর্মহীন। ফলে এই শিশুগুলো দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের জন্য বাধ্য হয়েই শিশুশ্রমের সাথে যুক্ত হয়। এসব শিশুদের জন্য সরকার সহ বিভিন্ন এনজিও বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় দক্ষতা ও আয়বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। ফলে ঘরে ঘরে আয়ের উৎস তৈরি হচ্ছে।”
শিশুশ্রম বন্ধে সঞ্জু রায়ের পরামর্শ, “সুবিধাবঞ্চিত বা পথশিশুদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারকে গুরুত্বের সঙ্গে উদ্যেগ নিতে হবে।
“দারিদ্র্যের জন্য যেসব শিশু শিশুশ্রমের সাথে যুক্ত হয়েছে তাদের পরিবারকে আয়বৃদ্ধিমূলক কাজের সুযোগ করে দিতে হবে। এছাড়া শিক্ষার অধিকারের পাশাপাশি নূন্যতম নাগরিক সুবিধাসমূহ রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করতে হবে।”