Published : 24 Feb 2020, 01:48 AM
বগুড়া জেলা পরিচিতির ওয়েবসাইটে দেওয়া সরকারি তথ্যে করতোয়া নদীকে বলা হয়েছে 'বড় ও পবিত্র'। তবে দখলে সংকুচিত আর দূষণে কালো পানির করতোয়া নদী এখন এর ধারেকাছেও নেই।
বগুড়া সদর উপজেলার চেলোপাড়া এলাকায় ফতেহ আলী সেতু বা চেলোপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন করতোয়াকে কোনোভাবেই নদী হিসেবে চেনা যায় না। রাসায়নিক আর পয়ঃবর্জ্য নদীকে দূষিত করেই চলেছে; সেই সঙ্গে নাগরিক জীবনে নিত্য ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বর্জ্যের স্তূপ জমছে এখানে।
সেতু থেকে কাছেই রয়েছে ফতেহ আলী বাজার; আর এতে করে বর্জ্য ফেলার সহজ শিকার হচ্ছে নদীটি। ফলের বাজারের যাবতীয় প্লাস্টিক মোড়ক, পলিথিন ফেলা হয় করতোয়াতেই। বাজারে জবাই করা গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি ও কবুতরের নাড়িভুঁড়ি-পালক এবং মৃত পশু-পাখিও ফেলা হচ্ছে নদীতে। নদী থেকে বাতাসে ভেসে আসে মলমূত্রের তীব্র গন্ধ।
সেতু উপর দিয়ে চলতে চলতে মানুষজন মিউনিসিপালিটির ডাস্টবিন ভেবে হাতে থাকা কোমল পানীয়র বোতলটি ছুঁড়ে ফেলছে নদীতে। বিয়েসহ বিভিন্ন ভোজের অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা ওয়ানটাইম প্লেট-গ্লাস ফেলার একমাত্র জায়গা যেন এই নদীটিই।
নদীর এই অংশে পানির প্রবাহ প্রায় স্থবির থাকায় করতোয়াকে মৃত বললে ভুল হবে না। দূষণ ছাড়াও প্রবাহ কমে আসার আরেকটি কারণ নদী দখল।
স্থানীয়রা তো বলছেই, গণমাধ্যমেও খবর হয়েছে বগুড়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী নদী দখলদার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ – টিএমএসএসকে নিয়ে। করতোয়া নদীর ভেতরে তারা কয়েক একর জায়গা দখল করে রেখেছে এমন অভিযোগ রয়েছে।
https://www.youtube.com/watch?v=TMyPL_jjlmU
বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে আমাদের এই একটাই নদী। আসা-যাওয়ার পথে নদীর শীতল হাওয়া আমাদের সজীব করতে পারতো, সেতুর নিচ দিয়ে বিকাল বেলা নৌকা নিয়ে ভেসে বেড়াতে পারতাম আমরা; কিন্তু এসবের কোনোটিই এখন আর বাস্তব নয়।
নদী বাঁচাতে এখন হাত পাততে হচ্ছে সরকারের কাছে। প্রত্যাশা এটাই আমাদের করতোয়া নদীটি জলে ভরে উঠুক।