Published : 24 Mar 2017, 08:19 AM
'আমরা ছাদের ওপর থেকে অপারেশন শুরু করি। নিচে কতজন জঙ্গি আছে জানিও না। জঙ্গিরা গুলি করছে, বোমাও ছুড়ছে। আমরাও গুলি করে নিচে নামার চেষ্টা করছি। হঠাৎই পেটে একটা তরমুজ সাইজের বোমা বেঁধে ছাদে চলে এল এক জঙ্গি। ওটা ফাটলেই আমাদের ১০ জনের বাঁচার কোনো উপায় নেই। এ সময় আত্মঘাতী হামলাকারী আর সোয়াট দলের মাঝে বোম্ব শিল্ড (বোমা রোধী বিশেষ ঢাল) নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন সোয়াটের সদস্য কনস্টেবল শাওরিদ হাসান। মুহূর্তের মধ্যেই ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলা আত্মঘাতী হামলাকারীর শরীর। আমাদের সবার শরীরেই আত্মঘাতীর শরীরের মাংস, নাড়িভুঁড়ি ছিটকে এসে লাগল। আর বিস্ফোরণের প্রচণ্ড ধাক্কায় ঢালসহ শাওরিদ ছিটকে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যান। ঢালটাও দুমড়ে-মুচড়ে যায়। শাওরিদ আর তাঁর ঢাল বাঁচিয়ে দেয় সবাইকে।'
এমন ভাবেই সোয়াটের একজন সদস্য বলছিলেন একজন সাহসী সোয়াট কনস্টেবল এর সাহসীকতার গল্প।
'পুলিশ' জনগণের বন্ধু। কয়েকজন অসাধু পুলিশের অপকর্মের কারণে বাহিনীটির দুর্নাম রটলেও শাওরিদ এর মত সাহসী পুলিশ সদস্যকে নিয়ে অনায়াসে জাতি গর্ব করে কথা বলতে সক্ষম হবে।
নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গী হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচালেন ১০ জনের মত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। গত বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের প্রেমতলায় ছায়ানীড় নামের দোতলা বাড়িটিতে সোয়াট টিমের সদস্যরা জঙ্গীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। অভিযানে সক্রিয় অবস্থানে থাকেন জঙ্গীরা।
পুলিশ জনগণের বন্ধু কথাটি যেমন সঠিক, তেমনি কিছু অসাধু পুলিশের অপকর্মে গোটা পুলিশ ফোর্সটির দুর্নাম রটে যায়। আমরা সাধারণ আম জনতা মনেকরি পুলিশ শুধু খারাপ কাজ করে। কিন্তু এই পুলিশ সদস্যরা যে জীবনের সর্বচ্চ ঝুঁকি নিয়ে আমাদের সেবা প্রদান করে তা শাওরিদের কাছ থেকেই প্রমাণ মেলে।
শাওরিদ শুধু তার টিমটিকে বাঁচায় নি, বাঁচিয়েছে গোটা জাতিকে। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহীনির এ্যাকশনেরও চমৎকার নিদর্শন রেখেছেন।
এই কনস্টেবল এর বেতন হয়তো সামান্য, কিন্তু কৃতিত্বে সে দেশসেরা বীরের পুরুষ্কার পাওয়ার যোগ্য। অচিরেই প্রশাসনের সর্বচ্চ মহল থেকে সোয়াট পুলিশের এই সাহসী যোদ্ধাকে বীরের সম্মানে ভূষিত করা হোক এটাই কামনা।