Published : 30 Jan 2015, 12:16 AM
বাংলাদেশের বিদ্বগ্ধজন হিসাবে খ্যাত ডঃ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য উনাদের প্রিয় জায়গা টেলিভিশন টক শো'তে তার মুল্যবান মতামত নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। তিনি চলমান আন্দোলনে জ্বালাও-পোড়াও এবং মানুষের মৃত্যুতে দুঃখ পাচ্ছেন। বেদনাহত হয়েছেন এবং সেই তার উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন সরকারের এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জোর প্রয়োগ না করে জনগনকে সাথে নিয়ে মোকাবেলা করতে বলেছেন।
বিশিষ্টজনেদের মতে, বেগম খালেদা জিয়া গনতন্ত্র উদ্ধারের জন্যে মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারছেন, বোমা হামলা করছেন, বাস ট্রাক আর ট্রেনে হামলা চালিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে পর্যুদস্ত করছেন, যার বিপরীতে সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশবাহিনী, র্যাব আর মাঝে মাঝে বিজিবির টহল বাড়িয়ে জনগনের জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই চেষ্টাকেই ডঃ ভট্টাচার্য্য বাবুর পছন্দ হচ্ছে না।
বেগম খালেদা জিয়া তার দল এবং জামাত শিবির নিয়ে যদি প্রকাশ্যে গনতন্ত্র উদ্ধারের জন্যে রাস্তায় নামতেন তবে জনগন যেমন তার ডাকে নেমে আসতেও পারতো তেমনি সরকারের উপর যদি জনগনের আস্থা থাকতো তবে সেই আন্দোলনে সাড়া দিতো না। বা তাদের সেই আন্দোলনকে জনগণই রুখে দিতো।
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেছেন হরতাল অবরোধে জনগণের যে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে তাতে সরকার কোনভাবেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের শক্তি প্রয়োগ করছে তা যুক্তিযুক্ত নয়। মন্ত্রীদের এবং বাহিনী প্রধানদের কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর হবার যে ঘোষণা এসেছে তাতে তিনি এবং তার উপস্থাপককে নাখোশ হয়েছেন।
তাদের মতে আগুনে পুড়ে মানুষ মরছে মরূক, যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাক কোন ক্ষতি নেই, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে পড়ুক তাতে ভট্টাচার্য্য বাবুদের বরঞ্চ লাভ। ২০০৭ সালের মতো আবার দুই দল জনগন নিয়ে মাঠে নেমে আসবে, দেশ হয়ে উঠবে অশান্ত, মানুষের মৃত্যুর মিছিল বাড়বে প্রতিদিন এবং উনারা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আবার ক্ষমতার মসনদে বসার সুযোগ পাবেন।
উনাদের বিশ্লেষণ মতে বেগম সাহেবের গনতন্ত্র উদ্ধারের জন্যে এই হত্যা, খুন, জ্বালাও-পোড়াও এর মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ যদি জনগনকে সাথে নিয়ে মাঠে নামে তাহলে দেশকে এক গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হবে। আর সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের কিছু ভুঁইফোড় সুশীল, বুদ্ধিজীবী আর এনাদের মতো অর্থনীতিবিদদের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম হয়।
এইসব বিশিষ্ট জনেরা ২০০৬ – ২০০৭ সালেও একদিকে খালেদা জিয়াকে অনড় থাকার বুদ্ধি দিয়ে অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার মদদ যুগিয়েছিলেন বলেই কেউ কেউ মনে করেন। যার ফলশ্রুতিতে 'উদ্দীনের দল আর এইসব অর্থনীতিবিদরা মিলে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয়েছিলেন। আর দেশকে পিছিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন অন্তত দশ বছর। দুর্নীতির বিরূদ্ধে জেহাদের নামে হরিলুঠ করে দেশটার বারোটা বাজিয়েছিলেন বলেই পরবর্তীতে প্রতীয়মান হয়েছে।
প্রিয় বাবু অত্যন্ত সুন্দরভাবেই সমগ্র আলোচনায় বেগম সাহেবের কোন সমালোচনা করেননি। বরঞ্চ বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় থাকার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। উনাদের আলোচনায় বেগম সাহেবের এই জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন যেন এক যৌক্তিক পর্যায়, তাই বোঝা গেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।