“জানি না উনার (হাছান মাহমুদ) গান শোনার সুযোগ আপনাদের কবে হবে, আমি কিন্তু শুনেছি!” বলেন প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
Published : 19 Oct 2023, 05:12 PM
কুয়ার উপর মাথা রেখে গান গাইতে গিয়ে ছোটবেলায় সেই কুয়াতে পড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। পরে একজন কুয়া থেকে পানি তোলার বালতি ফেললে সেটি ধরে উপরে ওঠেন তিনি।
বৃহস্পতিবার তথ্য অধিদপ্তরে ‘সাবাস সোনার বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি গানের পোস্টারের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ছেলেবেলায় গান গাইতে গিয়ে এমন বিপদে পড়ার কথা মনে পড়ে যায় হাছান মাহমুদের।
তার কথায়, “একটি মজার ঘটনা আছে, হয়তো কেউ কেউ জানে না। আমার ছেলেবেলায় চট্টগ্রাম শহরে আমাদের যেখানে বাসা ছিল, একেবারে ছোটবেলায় সেখানে কুয়া ছিল, ঢাকা শহরেও তখন (কুয়া) ছিল। তো কুয়া থেকে পানি তোলা হতো। এখন আর ঢাকা শহরেও নাই, চট্টগ্রাম শহরেও নাই।
“সেই কুয়ার মধ্যে মাথা দিয়ে গান করতাম (কুয়ার মধ্যে শব্দ করলে তার প্রতিধ্বনি হয়) । একদিন এ রকম (কুয়ার মধ্যে) মাথা দিয়ে গান করতে গিয়ে কুয়ার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম।”
ঘটনার সময় কেউ বাসায় ছিল না জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার বাবা আইনজীবী ছিলেন, তিনি তখন কোর্টে ছিলেন। আমার মা অসুস্থ ছিল, হাসপাতালে ছিলেন। বাসায় ১৭/১৮ বছরের একজন ছিল, সে পড়ার আওয়াজটা শুনেছে, কিছু একটা পড়ে গেছে।
“দৌড়ে এসে সে তখন যে বালতি দিয়ে পানি তোলা হয়- সেটা ফেলে; আমি তখন সেটা ধরে বসি, তখন সে টেনে তোলে।”
কুয়ার মধ্যে পড়ে তলানিতে গিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।
“আমার মনে আছে এত উপর থেকে পড়ে একেবারে কুয়ার বালি টাচ করেছিলাম।”
নিজেকে গানের একজন ‘ভালো’ শ্রোতা দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “মানুষ তো গান গায় কিন্তু গানের বিদগ্ধ শ্রোতাও তো দরকার আছে। আমি গানের একজন ভালো শ্রোতা, এজন্য বলছি আমি প্রতিদিন মোটামুটি গান শুনি এত ব্যস্ততার মধ্যেও। আমার পক্ষে তো সময় করে নেওয়া কঠিন হয়, রাতের বেলা গান শুনি ঘুমানোর আগে।
“সেজন্য ঘুমাতে একটু দেরিই হয়ে যায়, কালকে এক ঘণ্টা দেরি হয়েছে। যখন রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে কোনো জায়গায় যাই গাড়িতে, এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা তখন গান শুনি। আমার গান শেখার ইচ্ছা ছিল, শেখাটা হয়নি। গান শিখতে না পারার একটা বেদনা আছে।”
একসময় অভিনয় ও গান শেখার চেষ্টা করেছিলেন বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমি চট্টগ্রামে তীর্যক নাট্যদলের সদস্য ছিলাম। রোলটোল পাইনি, সেট টানাটানি ছাড়া। একটু রোল একটাতে মনে হয় পেয়েছিলাম। গান শেখাও হয়নি, অভিনয় শেখাও হয়নি। কোনোটাই হয়নি।
“আজকে আপনাদের (গায়ক) সঙ্গে কাজ করার সুযোগটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে করে দিয়েছেন। অভিনয় শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করা, একই সাথে গানের শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করে দিয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী এই কাহিনীগুলো জানেন না, এটা ঘটনাচক্রে হয়ে গেছে।”
‘সাবাস সোনার বাংলাদেশ’ গানের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, সময়ের প্রেক্ষাপটে এটা অসাধারণ গান। গানের মধ্যে কয়েকটি লাইন আছে আত্মমর্যাদার কথা।
“এই দেশটি আমাদের। আমাদের দেশ কীভাবে চলবে সিদ্ধান্ত নেবে দেশের মানুষ, বাইরের কেউ নয়; সেই কথাটার ইঙ্গিত এই গানের মধ্যে আছে।”
গানটি বর্তমান সময়কে ধারণ করে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “তথ্যমন্ত্রী মিউজিক ভালোবাসেন। উনি আমাকে বলেছেন, গতকাল রাতে ঘুমানোর আগে ভাবির সঙ্গে এক ঘণ্টা গান শুনেছেন।
“জানি না উনার গান শোনার সুযোগ আপনাদের কবে হবে, আমি কিন্তু শুনেছি!”
হাসানুজ্জমান মাসুমের লেখা ‘সাবাস সোনার বাংলাদেশ’ গানে সুর দিয়েছেন বাপ্পা মজুমদার, নির্দেশনায় ছিলেন গাজী শুভ্র।
নকীব খান, ফাহমিদা নবী, বাপ্পা মজুমদার, এলিটা করিম, দিলশাদ নাহার কণা, সোমনুর মনির কোনাল, কিশোর দাস, জামান সাইফ, সাজ্জাদ হোসেন শাওন ও ইমরান মাহমুদ এই গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। আগামী শুক্রবার থেকে গানটি ইউটিউবে পাওয়া যাবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।