“এমনিতেই মিয়ানমারের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছে; এখন রোহিঙ্গা বা যেই আসুক, কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না,” বলেন তিনি।
Published : 13 Feb 2024, 03:19 PM
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মিয়ানমার থেকে আর কাউকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
তিনি বলেছেন, “এমনিতেই মিয়ানমারের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে রয়েছে। রোহিঙ্গা বা যেই আসুক, মিয়ানমার থেকে আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।”
মঙ্গলবার ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে হাইওয়ে পুলিশের 'সেবা সপ্তাহ-২০২৪' উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কথা বলছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মিয়ানমারে চলমান যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “মিয়নমারের চতুর্দিকেই যুদ্ধ লেগে আছে। বাংলাদেশ সীমানায় আরাকান আর্মির সঙ্গে তাদের বাহিনীর যুদ্ধ চলছে। আমরা দেখছি তাদের এই যুদ্ধ এতটাই তীব্র হয়েছে যে, মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা, ধারণা করছি দুয়েকজন সেনা সদস্য আমাদের এখানে ঢুকে পড়েছে।
“এদের মধ্যে কেউ অস্ত্র নিয়ে এসেছে, কেউ অস্ত্র ছাড়া ঢুকে গেছে। তবে তারা এসেছে জীবন রক্ষার জন্য, যুদ্ধের জন্য ঢোকেনি। আমাদের বিজিবি সদস্যরা তাদের অস্ত্রগুলো রেখে আটক অবস্থায় আমাদের এখানে রেখেছে। এদের মধ্যে যারা আহত, তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা তাদের ফেরত নিতে জানিয়েছি।”
জাহাজযোগে মিয়ানমার শিগগিরই তাদের লোকজনদের নিয়ে যাবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমি মনে করি, দুয়েক দিনের মধ্যে তাদের সদস্যদের তারা ফেরত নিয়ে যাবে। আমাদের সঙ্গে তাদের কোনো কনফ্লিক্ট নেই, কোনোরকম যুদ্ধ নেই, তারা আত্মরক্ষার্থে এখানে এসেছে।
“যারা আত্মরক্ষার্থে এখানে আসছে, তাদের সরকারকে বলেছি নিয়ে যেতে। তারা নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড সবাই অতন্দ্রপ্রহরীর মত কাজ করছে। সেখানে যুদ্ধ হচ্ছে, এ সীমানায় তাদের কেউ আসবে বলে মনে হচ্ছে না। তারপরেও যদি আসে আমাদের এখানে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।”
দীর্ঘদিন ধরেই মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেও। সীমান্তের ওপারের মর্টার শেল ও গুলি এসে পড়ছে এপারে। ফলে বাংলাদেশিরা রয়েছেন আতঙ্কে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপার থেকে আসা গোলায় দুইজন নিহত হয়েছেন। মর্টার শেল এসে পড়েছে বাংলাদেশির ঘরে, গুলি এসে লেগেছে অটোরিকশায়। বিদ্রোহীদের সঙ্গে তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপিসহ তিনশর বেশি মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। আর এখন তাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে আলোচনা চলছে।
এর আগে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নিধনযজ্ঞ থেকে বাঁচতে ২০১৭ সালে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসে। সেই জাতিগত নিধনে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিজপির সদস্যরা জড়িত ছিল কিনা, তা জানতে চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে।
জবাবে মন্ত্রী বলেন, “আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো লিস্ট নেই। তবে আমরা সেসময় দেখেছি মাইলের পর মাইল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, নদীতে লাশ ভেসে আসতে দেখেছি। সেখানে যে গণহত্যা চালাতে আমরা দেখেছি, সেসময় তাদের আর্মি দাঁড়ানো ছিল। তবে তারাই গণহত্যা করেছে কি না, জানি না। আন্তর্জাতিক আদালতে এটার বিচার চলছে।”