‘অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে মামলা নিয়ে’ প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টার অভিযোগ করা হয় বিবৃতিতে।
Published : 30 Dec 2022, 12:00 AM
ভোলার চরফ্যাশনে ভূমিহীন আন্দোলনে যুক্ত এক নেতার স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় সব অপরাধীকে গ্রেপ্তার না করে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ৩৪ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্মস অ্যান্ড ডেভেল্পমেন্টের (এএলআরডি) প্রধান নির্বাহী শামসুল হুদার পাঠানো এক বিবৃতিতে সই করে তারা প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরে বলা হয়, গত ৩০ নভেম্বর রাতে মুজিবনগর ইউনিয়নের শিকদারের চর এলাকায় ১৪/১৫ জন সন্ত্রাসী ভূমিহীন নেতা আলম বাচ্চুর বাড়িতে ধারালো অস্ত্রসহ আক্রমণ করে তার স্ত্রী বকুলকে হত্যা এবং তার বড় বোন মুকুলকে আহত করে। আলম বাচ্চু সে সময় বাড়িতে ছিলেন না।
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, ঘটনার পর আলম বাচ্চু স্থানীয় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বলে। পরে পুলিশ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে ওই এলাকার অলিল চৌকিদারকে বাদী করে হত্যা মামলা নেয়, যাতে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করা যায়।
এরপর আলম বাচ্চু বাদী হয়ে ভোলা হাকিম আদালতে মামলার আবেদন করলে আদালত ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে দুলার হাট থানাকে সংশ্লিষ্ট নথি আদালতে সোপর্দ করার আদেশ দেয়।
গত ১৪ ডিসেম্বর র্যাব সদস্যরা মামলার অন্যতম আসামি আসলামকে গ্রেপ্তার করে জানিয়ে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, এ ঘটনার পর থেকে যাদের নামে অভিযোগ রয়েছে তারা চরে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে যারা ভূমিহীন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতা আলম বাচ্চুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এবং ভূমিহীন আন্দোলনে যুক্ত তাদেরকে অজ্ঞাতনামার তালিকায় গ্রেপ্তার করার হুমকি দিচ্ছে পুলিশ।
বিবৃতিতে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলামের বক্তব্যের সঙ্গেও দ্বিমত করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুলতানা কামাল, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না, আইনজীবী তবারক হোসেইন,
পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, ব্লাস্টের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, এএলআরডির প্রধান নির্বাহী শামসুল হুদা, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক নূর খান, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মেসবাহ কামাল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেশনাল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট স্বপন আদনান, আলোকচিত্রী শহীদুল আলম, লেখক রেহনুমা আহমেদ, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, সমাজকর্মী ও নারীপক্ষের সাবেক সভানেত্রী
শিরীন হক, ঢাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি বদরুল আলম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিমুদ্দিন খান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, সুজনের কোষাধ্যক্ষ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, ঢাবির ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, গবেষক ও অধিকারকর্মী রোজিনা বেগম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, গবেষক ও মানবাধিকারকর্মী হানা শামস আহমেদ, সাংগতের কোর মেম্বার মুক্তাশ্রী চাকমা, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক
জায়েদ ইকবাল খান, বাংলাদেশ কৃষাণী সভার সভাপতি শামসুন্নাহার খান ডলি, বাংলাদেশ আদিবাসী সমিতির সভাপতি অমলিক কিসকু এবং সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভারসিটির উপাচার্য ও টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন পারভীন হাসান।