হাই কোর্টের দেওয়া ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের রায় স্থগিত করেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
Published : 29 Aug 2022, 08:56 PM
দুদকের মামলায় তিন বছর জেল খাটার ঘটনায় নিরপরাধ পাটকলকর্মী জাহালমকে ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ লাখ টাকা সাত দিনের মধ্যে দিতে ব্র্যাক ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
একই সঙ্গে হাই কোর্টের দেওয়া ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের রায় স্থগিত করেছে আদালত।
সেই সঙ্গে আদেশে বলা হয়েছে, পাঁচ লাখ টাকা সাত দিনের মধ্যে পরিশোধ না করা হলে হাই কোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হবে।
এ সংক্রান্ত হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ব্যাংকটির পক্ষে আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) নিয়ে গেলে সোমবার শুনানি শেষে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
ব্যাংকের আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে শুনানির জন্য আগামী ৩১ অক্টোবর দিন রেখেছে চেম্বার আদালত।
আদালতে আবেদনের বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আনিসুল হাসান। অপরদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ব্র্যাক ব্যাংককে আগামী সাত দিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করতে বলেছেন আদালত। পাশাপাশি হাই কোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করা হয়েছে। এই সাত দিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ না করা হলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হবে বলে শর্ত দিয়েছেন আদালত।”
এর আগে গত বৃহস্পতিবার লিভ টু আপিল করে ব্র্যাক ব্যাংক।
জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে ব্র্যাক ব্যাংককে নির্দেশ
২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় দৈনিকে ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না...’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশ গুপ্ত। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা, মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করে হাই কোর্ট বেঞ্চ। রুলও জারি করা হয়।
পরে একই বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টরা হাজির হলে হাই কোর্ট জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন এবং দুদকের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা চায়। আদেশ অনুসারে দুদক হলফনামা করে ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়। পরে জাহালম প্রশ্নে ব্যাংক ঋণ জালিয়াতির ৩৩ মামলার এফ আই আর, চার্জশিট, সম্পূরক চার্জশিট এবং সব ব্যাংকের এ সংক্রান্ত নথিপত্র দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেয় আদালত।
পরে ২০২০ সালের ১৭ এপ্রিল হাই কোর্ট আরেক আদেশ দেয়। জাহালম কাণ্ডে কে বা কারা দায়ী তা দেখার জন্য দুদকের কাছে ফের প্রতিবেদন চাওয়া হয়। এ আদেশে দুদক, ব্র্যাক ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক আদালতে প্রতিবেদন দেয়।
এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রুলের ওপর শুনানি শেষ হলে ৩০ সেপ্টেম্বর রায় দেয় হাই কোর্ট। রায়ে ব্র্যাক ব্যাংককে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার এক মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেন। টাকা পরিশোধ করে এক সপ্তাহ পর রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
হাই কোর্টের ৮৮ পৃষ্ঠার ওই পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়। এ রায়টিই স্থগিত চেয়ে লিভ টু আপিল করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।