সন্তানদের দেখতে যশোর থেকে ঢাকায় এসে ধর্ষণের শিকার হন ওই নারী।
Published : 05 Feb 2023, 08:24 PM
সন্তানদের দেখতে যশোর থেকে ঢাকায় আসা এক নারীকে বসিলা এলাকায় দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচ আসামির মধ্যে তিন জন অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন; বাকি দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
পাঁচ আসামিকে রোববার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় আসামি আল-আমিন হোসেন, মো. সবুজ ও শফিকুল ইসলাম ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
পরে ঢাকার মহানগর হাকিম শেখ সাদী আসামি শফিকুলের, হাকিম নুরুল হুদা চৌধুরী আসামি সবুজের ও হাকিম তরিকুল ইসলাম আসামি আল আমিনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ হয়।
মামলার ‘সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে’ আসামি বিল্লাল হোসেন ও রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেলকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শান্তা আক্তার তাদের দুই দিনের রিমান্ডে মঞ্জুর করেন।
ঢাকার মহানগর পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
গত ২৬ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর থানায় করা মামলায় ২৯ বছর বয়সী ওই নারী বলেন, স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি বছিলায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার স্বামী পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। পারিবারিক বিরোধে মাস চারেক আগে স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। এরপর সন্তানদের বাবার কাছে রেখে গ্রামের বাড়ি যশোরে চলে যান তিনি।
গত ২৫ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে সন্তানদের দেখতে ওই নারী একাই যশোর থেকে বছিলায় আসেন। কিন্তু স্বামী সন্তান নিয়ে যে বাসায় থাকতেন, সে বাসায় গিয়ে জানতে পারেন যে তারা কেউ সেখানে নেই।
এরপর আশেপাশে তাদের খোঁজ করে না পেয়ে যশোরে ফিরে যেতে গাবতলীতে যাওয়ার জন্য একটি রিকশা ভাড়া করেন ওই নারী। রিকশাওয়ালা তাকে গাবতলী না নিয়ে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করার সময় হঠাৎ দুইদিক থেকে দুইজন ওই রিকশায় উঠে সেই নারীকে জিম্মি করে ফেলে।
পরে রিকশাওয়ালাসহ তিনজন মিলে তাকে ভয় দেখিয়ে বছিলার ফিউচার টাউনের ৫ নম্বর সড়কে একটি নির্মাণাধীন বাসার শ্রমিকদের অস্থায়ী টিন শেড ঘরে নিয়ে আটকে রাখে বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন বাদী।
সেখানে আরও দুইজন ছিল। তারা সবাই মিলে চড় থাপ্পড় দেওয়ার পাশাপাশি ওই নারীকে হত্যার হুমকি দেয়। তাদের মধ্যে চারজন পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে এবং একজন পাহারা দেয় বলে ওই নারী তার মামলায় উল্লেখ করেছেন।
এ ঘটনার তদন্তে নেমে শনিবার রাতে ঢাকার গাবতলী, মোহাম্মদপুর, ডেমরা এবং ভোলায় অভিযান চালিয়ে শফ্কিুল (২৬), বিল্লাল (২৫), আল আমীন (২৬), সবুজ (২৬) ও রাসেলকে (২৪) গ্রেপ্তার করা হয়।
এই পাঁচজনের মধ্যে শফিকুলকে ধর্ষণের ঘটনার ‘হোতা’ আখ্যায়িত করে পুলিশ জানিয়েছে, তার রিকশাই ওই নারী ভাড়া করেছিলেন। গ্রেপ্তার অন্যদের মধ্যে পেশায় ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারী ও ট্রাক চালকও আছেন।