দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের দায়ে জেল খাটাতেই শেষ হচ্ছে না মিজানুর রহমানের সাজা, অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ রাখতেও পারছেন না তিনি।
আদালতের রায়ে সাত বছর কারাদণ্ডের সঙ্গে পুলিশের এই সাবেক ডিআইজির অবৈধ সব সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ হয়েছে বলে দুদকের আইনজীবী জানিয়েছেন।
মিজানের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং ৩ কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগের মামলায় বুধবার রায় দেন ঢাকার ষষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম।
রায়ে মিজানকে সাত বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ভাই মাহবুবুর রহমান, ভাগ্নে মাহমুদুল হাসানকে দেওয়া হয়েছে সাত বছর করে কারাদণ্ড।
রায়ে বলা হয়েছে, মিজান দুর্নীতির মাধ্যমে যে সম্পদ অর্জন করেছেন ও তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সমস্ত সম্পদ (স্থাবর-অস্থাবর) রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে।
এক নারীকে জোর করে বিয়ের পর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠায় ২০১৮ সালে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মিজানুর রহমানকে। এরপর তার অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক।
সেই অনুসন্ধান চলার মধ্যেই দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের সঙ্গে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই একটি মামলা হয়। ওই মামলার পর মিজান-বাছির দুজনই বরখাস্ত হন। সেই মামলায় ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মিজানের ৩ বছরের এবং বাছিরের ৮ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
এই মামলা হওয়ার আগের মাসে ২০১৯ সালের ২৪ জুন মিজান, তার স্ত্রী, ভাই, ভাগ্নে বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। বুধবার সেই মামলায় সাজা হল তাদের।
রায়ে ডিআইজি মিজানকে পৃথক তিন ধারায় ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। দুদক আইনের একটি ধারায় তিন বছরের, আরেকটি ধারায় সাত বছর এবং মুদ্রা পাচার আইনের একটি ধারায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয় তাকে।
অন্য তিন আসামিকে দেওয়া হয় সাত বছরের কারাদণ্ড। তাদের মধ্যে মিজানের স্ত্রী ও ভাই পলাতক। ভাগ্নে জামিনে ছিলেন। তবে বুধবার রায়ের পর তাকে কারাগারে পাঠান হয়।
আসামিদের সবাইকে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ৩ কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার পাঁচ টাকার দ্বিগুণ অর্থাৎ ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৩৬ হাজার ১০ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। সেই অর্থ দিতে না পারলে তাদের আরও ৬ মাস েকারাভোগ করতে হবে।
আসামিদের সব ধারার সাজা একত্রে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান তাদের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম। সেক্ষেত্রে ডিআইজি মিজানকে ৬ বছর এবং অন্য আসামিদের চার বছর করে সাজা ভোগ করতে হবে।