আগামী ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী দিন ঠিক করে দিয়েছেন ঢাকার মহানগর হাকিম রাশিদুল আলম।
Published : 07 Aug 2023, 12:48 PM
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার জন্য শততম বারের মত সময় দেওযা হল তদন্ত সংস্থা র্যাবকে।
আলোচিত এ মামলায় সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল তদন্ত সংস্থা র্যাবের। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তা এদিনও প্রতিবেদন দিতে ব্যর্থ হন।
পরে ঢাকার মহানগর হাকিম রাশিদুল আলম আগামী ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী দিন ঠিক করে দেন।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনেক মামলারই তো ক্লু পাওয়া যাওয়া যায় না। তখন তদন্ত কর্মকর্তা কমকতা লিখে দেন ‘ক্লু লেস’। আমাদের কাছে মতামতের জন্য উপস্থাপন করা হয়। আমরাও তাতে সায় দিই। এতটা দেরি করা মোটেও উচিৎ হচ্ছে না।
“সাগর-রুনি হত্যার রহস্য ভেদ করা যাচ্ছে না তা স্পষ্ট বলে দিতে সমস্যা কোথায়?”
দীর্ঘ সময় পেরিয়েও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় হতাশ সাগর-রুনির পরিবার।
তদন্ত সংস্থা র্যাব বলছে, গুরুত্ব সহকারে তারা মামলাটি তদন্ত করছে। আর রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব যদি তদন্ত করতে না পারে, অন্য কোনো সংস্থা দিয়ে তদন্ত করা যেতেই পারে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় খুন হন বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাছরাঙার বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি।
সেই রাতে সেই ফ্ল্যাটে তারা দুজনের সঙ্গে ছিল তাদের একমাত্র সন্তান তখন পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ। তাকে উদ্ধৃত করে পুলিশ তখন জানিয়েছিল, খুনি ছিল দুজন।
সাগর-রুনি হত্যা মামলা: শততম ধার্য দিনেও প্রতিবেদন জমা পড়ছে না
সাগর-রুনি হত্যা মামলা: ৯৯ বারের মতো পেছাল প্রতিবেদনের সময়
আলোড়ন তোলা এই হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর বছরের পর বছর গড়ালেও হত্যা রহস্যের কিনারা হয়নি।
হত্যাকাণ্ডের পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন রুনির ভাই নওশের রোমান। বিভিন্ন সময়ে মোট আটজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজন জামিনও পান।
তারা হলেন– রুনির বন্ধু তানভীর রহমান, বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।
প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তে নামে। চারদিন পর তদন্তের ভার দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে।
তারা রহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দায়িত্ব পেয়ে ডিএনএসহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক পরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থল থেকে বটি, পরিধেয় কাপড়সহ বেশ কিছু বস্তু পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবেও পাঠায় র্যাব। কিন্তু এতদিনেও তার ফল প্রকাশ করা হয়নি।
নিহত মেহেরুন রুনির ভাই ও মামলার বাদী নওশের রোমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের জন্য নতুন করে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এটি শুধু আমাদের জন্য না, দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার ব্যবস্থা-সব কিছুর জন্যই লজ্জার।
“প্রায় ১২ বছর হতে চলল তদন্তে ব্যর্থতার। তদন্তে কিছু বের করতে না পেরে এতোদিন ধরে সময় নিয়ে নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তারা, এটা আসলে খুবই লজ্জাজনক।”
এ বিষয়ে র্যাবের বক্তব্য জানতে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনকে ফোন করে সাড়া পাওয়া যায়নি।