“বিদেশের কিছু লোক এখানে এসে কথা বলেন; অথচ আমরা আমেরিকায় গিয়ে কিন্তু কথা বলতে পারছি না,” বলেন তিনি।
Published : 06 Oct 2023, 01:29 AM
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিতে বিভিন্ন দলকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আলোচনার আমন্ত্রণ জানানো ছাড়াও ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, এর বেশিকিছু তারা করতে পারছেন না।
নির্বাচন ভবনে বুধবার ‘অবাধ ভোটাধিকার: প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালার সমাপনী বক্তব্যে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি ভোট ‘ইফেকটিভিলি কনটেস্টেড’ হলে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটা ভারসাম্য সৃষ্টি হয়ে যায়, আমাদের দায়িত্ব অনেকখানি কমে আসে। সেজন্য আমরা ইনক্লুসিভ নির্বাচন লাইক করি, আমাদের দায়িত্ব নয় কাউকে নিয়ে আসা।
“তবুও আমরা নৈতিক অবস্থান থেকে অনেকবার দাওয়াত দিয়েছি; আসুন আমাদের সাথে চা খান, ডিও লেটার পর্যন্ত দিয়েছি। এরচেয়ে আর কিছু বেশি আমরা করতে পারছি না।”
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার বিষয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনটা আমরা সৎভাবে, আন্তরিকভাবে করতে চাই। কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করার জন্য আমরা এ দায়িত্বটা গ্রহণ করিনি।… আমরা নির্বাচনের লিগ্যালিটিটা দেখব। নির্বাচনের লেজিটেমেসির বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন ফাইট করবে না। নির্বাচনে লেজিটেমেসির বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক সমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব ফাইট করবে।”
রাজনৈতিক সমঝোতায় বরাবরের মতো এবারও জোর দেন তিনি।
সিইসি বলেন, “সকলেই বলে থাকেন সংলাপের মাধ্যমে একটা সমঝোতার প্রয়োজনীয়তার কথা। আমরাও বলেছি সংলাপের মাধ্যমে সমাঝোতা করে যদি একটি অনুকূল পরিবেশ গড়ে উঠত, তাহলে আমাদের জন্য কাজটা সহজসাধ্য হতো।”
পোলিং এজেন্টকে ভোটের আগের দিন গ্রেপ্তারের অভিযোগের বিষয়ে কঠোর অবস্থান তুলে ধরেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
“ভোটের আগে পোলিং এজেন্ট গ্রেপ্তার- তা কখনও হোক চাই না। আমরা সরকারকেও বলব, আমরা জানাব (লিস্টেড পোলিং এজেন্ট) অ্যারেস্ট করতে হলে ছয় মাস আগে করেন বা ভোটের পরে করেন। অ্যারেস্ট করতে হলে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত হবে না, আমরাও কলঙ্কিত হব সেক্ষেত্রে- আমি আন্তরিকভাবে মনে করি। পোলিং এজেন্ট না থাকলে নির্বাচনটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। পারসেপশন নেগেটিভ হবে।”
এজেন্টকে বের করে দেওয়ার যে ‘সংস্কৃতি’ রয়েছে তার সমালোচনার পাশাপাশি বিষয়টি অবহিত করা হলে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।
নির্বাচন নিয়ে ‘বিদেশিদের নাক গলানোর’ প্রসঙ্গে ইঙ্গিত করে সিইসি বলেন, “আমরা মানি বা না মানি, দেখা গেছে বিদেশের কিছু লোক এখানে এসে কথা বলেন। অথচ আমরা আমেরিকায় গিয়ে কিন্তু কথা বলতে পারছি না। এটার একটা কারণ হতে পারে আমেরিকা হয়ত শক্তিতে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। এটা হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে। আমি সেটা জানি না।
“ওরা এসে আমাদের দেশে কথা বলছে, এই যে কথা বলছে, ওরা কি নিজেরা এসেছে, নাকি আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি অবস্থাটা? এভাবে আমেরিকা, বিলেত এসে কথা বলছে- এ জন্য আমি খুব গর্ববোধ করি না।”
সুশীল সমাজও বিভক্ত থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
“সিভিল সোসাইটিও পলিটিক্যালি সার্ফলি ডিভাইডেড, এটা দুঃখজনক। এমন কোনো দু’চারটি সিভিল সোসাইটি গড়ে তুলতে পারিনি, যারা সর্বজন শ্রদ্ধেয়, নিমোর্হ থেকে, পক্ষপাতিত্বহীনভাবে দেশ ও জাতির জন্যে কাজ করতে পারে। হয়ত পরবর্তী প্রজন্ম দেখবে প্রত্যাশিত সিভিল সোসাইটি হয়েছে।”
প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল ৪ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে:
https://www.facebook.com/bdnews24/posts/pfbid021rV5ZUv2iohgEocPCaQT5PsXwbRGZRXcPKry4DhkVZUDH9sijY3ov3qgTezvHpAAl