রানা প্লাজা ধসে হতাহতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ভবনটির মালিক সোহেল রানার জামিন আদেশ স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি ছয় মাসের জন্য স্ট্যান্ডওভার রেখেছে আপিল বিভাগ। ফলে হাই কোর্টে দেওয়া তার জামিন আদেশ আরও ছয় মাস স্থগিত থাকবে।
সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই আদেশ দেয় বলে জানান রানার আইনজীবী কামরুল ইসলাম।
আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “হাই কোর্টের দেওয়া জমিনের স্থগিতাদেশ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানির জন্য আরও ছয় মাস স্ট্যান্ডওভার রেখেছে আপিল বিভাগ।”
এই মামলায় গত ৬ এপ্রিল হাই কোর্ট থেকে জামিন পেয়েছিলেন সোহেল রানা। এরপর এই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা গত ৯ এপ্রিল চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। রাষ্ট্রপক্ষের ওই আবেদনে সেদিন চেম্বার আদালত সোহেল রানাকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠায় চেম্বার আদালত এবং ৮ মে শুনানি শেষে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন ১০ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করে আপিল বিভাগ।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে দশ তলা রানা প্লাজা ধসে পড়লে অন্তত ১ হাজার ১৩৬ জন নিহত হন, আহত হন কয়েক হাজার মানুষ। হতাহতদের অধিকাংশই ওই ভবনে থাকা কয়েকটি পোশাক কারখানার কর্মী ছিলেন।
ওই ঘটনায় পরদিনই সাভার থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। পাঁচদিন পর বেনাপোল সীমান্ত থেকে সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।
মামলা দায়েরের দুই বছরের বেশি সময় পর ২০১৫ সালের ১ জুন তদন্ত শেষে দুটি অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর।
এর একটিতে পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা-মা এবং তৎকালীন সাভার পৌরসভার মেয়র ও কমিশনারসহ ৪১ জনকে আসামি করা হয়। আর ইমারত বিধি না মেনে রানা প্লাজা নির্মাণের অভিযোগে অপর অভিযোগপত্রে সোহেল রানাসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়।
দুই অভিযোগপত্রে মোট আসামি ছিলেন ৪২ জন। এর মধ্যে সোহেল রানাসহ ১৭ জন দুটি মামলারই আসামি। আসামিদের মধ্যে তিনজন ইতোমধ্যে মারা গেছেন।