২০১৮ সালের মার্চে কারা হেফাজতে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি জাকির হোসেন মিলনের মৃত্যু হয়।
Published : 18 Oct 2022, 12:21 AM
কারাবন্দি অবস্থায় সাড়ে চার বছর আগে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি জাকির হোসেন মিলনের মৃত্যুর ঘটনায় ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে করা মামলার আবেদনের শুনানি পিছিয়েছে।
সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তিনি ছুটিতে থাকায় ভারপ্রাপ্ত বিচারক সৈয়দা হাফসা ঝুমা শুনানির জন্য ৩ নভেম্বর নতুন তারিখ রাখেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী কালাম খান জানান।
মিলনের চাচা বিএনপি নেতা বি এম অলি উল্যাহ গত ১২ অক্টোবর ২০১৩ সালের নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনের ১৫(২) ধারায় এই মামলার আবেদন করেন।
বিচারক মো. আছাদুজ্জামান সেদিন বাদীর আর্জি শুনে অধিকতর শুনানি ও আদেশের জন্য ১৭ অক্টোবর দিন রেখেছিলেন।
মামলায় শাহবাগ থানার তখনকার ওসি মো. আবুল হাসান (বর্তমানে রমনা থানার ওসি), রমনা মডেল থানার তৎকালীন ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম, ওই সময়ে শাহবাগ থানার দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন কুমার রায়, এসআই সাইদুর রহমান মুন্সি, এসআই অমল কৃষ্ণ ও এসআই শাহরিয়ার রেজাকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার থেকে পাঁচজন পুলিশ সদস্যকেও আসামি করার আবেদন করা হয়েছে মামলার আরজিতে।
দেরিতে মামলার আবেদন করার বিষয়ে আইনজীবী বলেন, “আসামিরা দীর্ঘদিন বাদী ও তার পরিবারকে ভয় দেখানোর কারণে মামলা করতে পারেননি। পরে সাহস সঞ্চয় করে ও পরিবারের অন্য সদস্যদের পরামর্শে তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন।”
মামলার আর্জিতে বলা হয়, “২০১৮ সালের ৬ মার্চ প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির মানববন্ধন শেষে মিছিল থেকে রমনা থানা পুলিশ মিলনকে আটক করে মারধর করতে করতে নিয়ে থানায় নিয়েও নির্মম নির্যাতন করে। মিলনের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করে পুলিশ।
পরদিন ৭ মার্চ মিলনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়।
আরজিতে বলা হয়, ৭ মার্চ পুলিশ ভ্যান থেকে নামানোর সময় মিলনের হাতে পায়ে ও শরীরের বিভিন্নস্থানে ‘জখম দেখেছিলেন’ তার চাচা।
“রিমান্ডের পর থেকেই মিলন প্রচণ্ড অসুস্থবোধ করছিলেন। পরে জেল কর্তৃপক্ষ তাকে কারা হাসপাতালে পাঠায়। তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় সেখানকার একজন সহকারী চিকিৎসক মিলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ঢাকা মেডিকেলে আনার পরপরই মিলনের মৃত্যু হয়।”
অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রমনা থানার ওসি মো. আবুল হাসান গত ১২ অক্টোবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “কারাগারে অসুস্থ হলে তাকে (মিলন) কারা কর্তৃপক্ষ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়, চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। একজন ম্যাজিস্ট্রেট সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। কোথাও দাগ বা জখমের চিহ্ন আছে– এমন কথা উল্লেখ করেননি। তাছাড়া ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ হার্ট অ্যাটাক বলা হয়েছে।”
তাহলে কেন মামলার আবেদন করা হয়েছে জানাতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “তারা যে অভিযোগ করেছেন সেটা সঠিক নয়। বর্তমানে এটি আদালতের বিষয়, আদালতই দেখছে। এ ব্যাপারে এখন বিস্তারিত মন্তব্য করা সমীচীন নয়।”