যুদ্ধের প্রভাব মোকাবেলায় চীনের ভূমিকা প্রত্যাশা শেখ হাসিনার

প্রয়োজনে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2022, 02:45 PM
Updated : 7 August 2022, 02:45 PM

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের প্রভাব মোকাবেলা করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও চীন একসাথে কাজ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার গণভবনে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি একথা বলেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা-অবরোধ ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা-অবরোধের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, “এসব কারণে সারা বিশ্বের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

“উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও চীন একসাথে কাজ করতে পারে।“

রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের পর বিশ্বে জ্বালানি ও নিত্য পণ্যের বাজারে অস্থিরতা চলছে। ডলারের দরের উর্ধ্বগতিতে বিভিন্ন দেশ আমদানি ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।

বৈঠককালে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার দেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে সমর্থন দেবে এবং একটি কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

শেখ হাসিনা বলেন, “জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এই সঙ্কট নিরসনে বাংলাদেশ চীনের সহযোগিতা চায়।”

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান আশা প্রকাশ করে ওয়াং ই বলেন, “তৃতীয় পক্ষের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন হলে চীন তার ভূমিকা পালন করবে।”

তারা এখন মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বাসস্থান নির্মাণ করছে বলেও জানান তিনি।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়নেও চীন বাংলাদেশকে সাহায্য করবে।

ওয়াং ই প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাইওয়ান ইস্যুতে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন বলে প্রেস সচিব জানান।

বাংলাদেশ ‘এক চীন নীতিতে’ বিশ্বাসী- এ কথা পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ চীনের সাথে তার বন্ধুত্বকে মূল্যায়ন করে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালের চীন সফরের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “বঙ্গবন্ধু পিপল’স রিপাবলিক অব চায়নার প্রতিষ্ঠাতা মাও সে তুংয়ের গুণমুগ্ধ ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তার ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইয়ে তা উল্লেখ করেছেন।”

শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানান এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভিডিও বার্তা দেওয়ায় তাকে ধন্যবাদ জানান।

ওয়াং ই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানান।

কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বার্তা পাঠানোর জন্য চীনা প্রেসিডেন্ট শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদও জানান।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।