কৃষি মার্কেটে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না।
Published : 28 Jan 2024, 04:32 PM
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিটি কর্পোরেশনের বরাদ্দ দেওয়া অন্তত ২১৭টি দোকান পুড়ে গেছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের বরাদ্দ দেওয়া দোকান ছিল ৩১৭টি। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত আমরা যে তথ্য পেয়েছি, ২১৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও কিছু অবৈধ দোকান পুড়েছে, সেগুলো ছিল ফুটপাতে।”
বৃহস্পতিবার ভোর পৌনে ৪টার দিকে কৃষি মার্কেটের নতুন টিনশেড কাঁচাবাজারে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিটের চেষ্টায় সকাল ৯টা ২৫ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অগ্নি নির্বাপক দলও আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের সহায়তা করে।
ওই মার্কেটের ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আলাবক্স সকালে বলেছিলেন, কাঁচাবাজার কৃষি মার্কেটে প্রায় ৭০০ দোকান রয়েছে, কোনো দোকানই আগুন থেকে পুরোপুরি রক্ষা পায়নি। অন্য ব্যবসায়ীদের কেউ চারশ, কেউ পাঁচশ দোকান পোড়ার কথা বলেছেন। তবে সিটি করপোরেশনের হিসাবে এই সংখ্যা দুইশর কিছু বেশি।
উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “মার্কেটের ব্যবসায়ী যারা আছেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, আমরা তাদের তালিকা করছি। বিভিন্ন সংস্থা এগিয়ে আসবেন। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে দাঁড়ব। আমাদের কর্মীরা কাজ করছে। যতটুকু সম্ভব ডিএনসিসির পক্ষ থেকে তাদেরকে সহযোগিতা করা হবে।”
ফায়ার সার্ভিস বলেছে, সিটি করপোরেশনের অধীনে থাকা এই মার্কেটে অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা ছিল না। পাশাপাশি অবৈধ দোকান ছিল। এসব বিষয়ে সিটি করপোরেশনের কী ভূমিকা ছিল– এমন প্রশ্নে সেলিম রেজা বলেন, “এ ব্যাপারে আমাদের সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এখানে বাজার সমিতি আছে, তাদেরকে আমরা এই কাজগুলো করার জন্য বারবার নির্দেশনা দিয়েছি, অনুরোধ করেছি। এই কাজগুলো না করার কারণেই আমরা এখন এর ভয়াবহতা দেখতে পাচ্ছি।”
রাজধানীতে নয়টি ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটের মধ্যে মোহাম্মদপুরে দুটি মার্কেট রয়েছে যেখানে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। কৃষি মার্কেটেও অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এই মার্কেটটি কেন তাহলে তালিকায় এল না, সেই প্রশ্নের উত্তরে সেলিম রেজা বলেন, “যে কমিটি তখন কাজ করেছে, সেসময় এই মার্কেটটি তালিকায় ঢোকেনি। উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আটটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটকে আমরা বলে দিয়েছি, ১৫ দিন বা ১ মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে। কোনো বাধা, কোনো কিছুর মুখেই আমরা আর থামব না।”
তিনি বলেন, “এই ভবনগুলোতে ব্যবসায়ী এবং বসবাসকারী যারাই থাকুন, তাদেরকে সেখান থেকে বের করে দিয়ে ভবনগুলোকে সিলগালা করে দিতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ভবনগুলোকে ফাঁকা করতে হবে। এই লক্ষ্যে আমরা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে দিয়েছি। তারা দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন করবেন।”
ঢাকার জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেছেন, কৃষি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হবে। তারপর সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মানবিক সহায়তা দেওয়া হবে।
(প্রতিবেদনটি প্রথম ফেইসবুকে প্রকাশিত হয়েছিল ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে: ফেইসবুক লিংক)