বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালককে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ করতে হবে; শুধু দক্ষই নই, চালককে নিরাপদও বানাতে হবে।
Published : 21 Oct 2022, 10:28 PM
দেশে প্রতি বছর যে পরিমাণ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে, এর পেছনে চালকের অদক্ষতাকে বড় কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সংলাপে’ এই মত উঠে আসে।
সভায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামছুল হক বলেন, “দুর্ঘটনাগুলো আমাদের হাতে তৈরি। তাই এটাকে দুর্ঘটনা বলা যায় না।”
চালককে প্রশিক্ষিত করার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “চালক প্রশিক্ষিত, দক্ষ না হলে দুর্ঘটনা আরও বাড়বে। চালকদেরকে দক্ষ বানাতে হবে। শুধু দক্ষই নই, চালককে নিরাপদ বানাতে হবে। যাতে যেকোনো পরিস্থিতিতে সে ম্যানেজ করতে পারে। তাই দেশে দক্ষ চালক তৈরি করা দেশে খুব জরুরি।”
বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ, সেবক ও ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টার আয়োজিত ওই সংলাপে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়।
বেসরকারি সংস্থা রোড সেইফটি ফাউন্ডেশনের হিসাবে, গত বছর দেশে ৫ হাজার ৩৭১টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন, আর আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন।
অন্যদিকে যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, ২০২১ সালে ৫ হাজার ৬২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৮০৯ জন নিহত হন; আহত হন ৯ হাজার ৩৯ জন।
অধ্যাপক সামছুল হক বলেন, “পার্কিং বা ওভার টেকিংয়ের কারণে ভুল করে থাকলে পুলিশ মামলা দিয়ে দেয়। এই মামলার টাকা দিয়ে দিল, কিন্তু সে (চালক) শিখতে পারল না।
“তাই এখানে যে ভুল করবে, তাকে যদি কোনো প্রশিক্ষকের কাছে পাঠানো হয় যে, এই দুটি লেসন শিখে আসবেন, ট্রেনিং করে আসবেন। তাহলে তার টাকাও গেল এবং সে শিখতে পারল।”
চালককে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার দায়িত্ব বিআরটিএর মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারপরে চালকের লাইসেন্স দেওয়া। গাড়ির ফিটনেস প্রক্রিয়া ও চালককে লাইসেন্স প্রদানে বিআরটিএকে আরও সচেতন হতে হবে।
“কার মাধ্যমে পরীক্ষা দেবে, সেটা থাকতে হবে। তারপরে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষা দেবে। তার দক্ষতা যাচাই হবে, সে যে জায়গায় গাড়ি চালাবে সেই জায়গায়। আমার মনে হয় বিআরটিএ এটা করে না।”
ড্রাইভারস ট্রেনিং সেন্টারের চেয়ারম্যান নুর নবী বলেন, “সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে হবে। আর এ দুর্ঘটনা কমাতে হলে ড্রাইভারের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
“গাড়ির পেছন থেকে মেরে দেয়, এর কারণটা কী? এর কারণ হচ্ছে রাস্তা উন্নত হচ্ছে, গাড়ি উন্নত হচ্ছে, কিন্তু আমাদের যে ড্রাইভার তারা উন্নত হচ্ছে না। কারণ তারা প্রশিক্ষিত না। তাদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে সড়কে দুর্ঘটনা কমে আসবে।”
এদিকে ডোপ টেস্টের নামে চালকদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি খান মোহাম্মদ বাবুল।
তিনি বলেন, “তাদেরকে সার্টিফিকেট দেওয়ার নামে অর্থ নেওয়া হচ্ছে। কয়েকজন মদখোর চালকের জন্য কেন সব চালককে এই হয়রানি হতে হবে।”