দাবি আদায়ে সোমবার কুয়েট ক্যাম্পাসে আমরণ অনশন শুরু করেন ৩২ শিক্ষার্থী।
Published : 23 Apr 2025, 12:55 AM
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কার আদেশ আসার পর উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনে একাত্মতা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বাংলা মোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসে এ সমর্থনের কথা জানান এনসিপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত।
এনসিপি মনে করে, কুয়েটের সংকট নিরসনে কালক্ষেপণ করে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে ঘটনার সূত্রপাতের সময় কুয়েট উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে হেনস্তার ঘটনায় দোষীদের শাস্তিও দাবিও করেছে এনসিপি।
উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে গত সোমবার কুয়েট ক্যাম্পাসে আমরণ অনশন শুরু করেন ৩২ শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে তিনজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল ভর্তি হন।
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার রাতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে আন্দোলনকারীদের প্রতি একাত্মতা জানায় এনসিপি।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি একদল শিক্ষার্থীর সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রদল ও বহিরাগত বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
ওই ঘটনার সূত্র ধরে গত ১৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সিফাত বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশ করেনি। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজেদের সাত কর্মী থাকার কথা বলেছেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় পরিসরে এ ধরনের আচরণ আমরা বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে লক্ষ্য করেছি। এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে; শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা এবং ভিসির পদত্যাগ দাবিতে গতকাল থেকে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
“ছাত্রদের নেতৃত্বে সংঘটিত জুলাই অভ্যুত্থান থেকে সৃষ্ট রাজনৈতিক দল হিসেব এনসিপি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি-দাওয়ার সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করাকে দায়িত্ব মনে করে।”
তিনি বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে হামলার সময় উপাচার্যকে শারীরিকভাবে হেনস্থার যে অভিযোগ পাওয়া গেছে, তারও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদের অধিকার সবার আছে, তবে শিক্ষকদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দপ্তরে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য আবেদন করলেও তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন সিফাত।
“দুই মাস আগে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কুয়েট শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি দিলেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, যা চরম দায়িত্বহীনতার বহিঃপ্রকাশ। ”
সিফাত বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। তাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে আমরা কুয়েটের ভিসি মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।”
আরও পড়ুন