হাই কোর্টের দেওয়া ৫০ পৃষ্ঠার রায় সোমবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
Published : 03 Jul 2024, 04:12 PM
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ চার কর্মকর্তার ৬ মাসের সাজা স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশ বাতিল করে দেওয়া হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের দেওয়া হাই কোর্টের ৫০ পৃষ্ঠার রায় বুধবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
তবে এই রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাননি বলে অভিযোগ করেছেন ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।
তিনি বলেন, “গত ১৮ মার্চ যখন হাই কোর্ট রায় দেন তখনই রায়ের কপি পাওয়ার জন্য সেকশনে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আজ সেকশনে রায়ের কপির জন্য গেলে সেখান থেকে বলা হয় আমাদের আবেদন নাকি পাওয়া যায়নি। তাই রায়ের কপি দেওয়া যাবে না।”
গত ১৮ মার্চ শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা অধিদপ্তরের করা মামলায় ইউনূসের ৬ মাসের সাজা ও দণ্ড শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালে স্থগিতের আদেশ বাতিল করে হাই কোর্ট।
এর ফলে ইউনূসসহ চার আসামির ৬ মাসের দণ্ড বহাল থাকবে। তবে সাজাভোগ, জরিমানা এবং কয়েকটি বিষয়ে নির্দেশনা স্থগিত থাকবে।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের করা ওই মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনকে ছয় মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়ে গত ১ জানুয়ারি রায় দেয় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালত।
সাজাপ্রাপ্ত অপর তিনজন হলেন গ্রামীণ টেলিকমের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৮ জানুয়ারি আপিল করেন ইউনূসসহ চারজন। শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল ওই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে এবং তৃতীয় শ্রম আদালতের দেওয়া রায় ৩ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করে চারজনকে জামিন দেয়।
৩ মার্চ ফের শুনানি শেষে জামিনের সময় পরবর্তী তারিখ ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
শ্রম আদালতের রায় ও আদেশ স্থগিত করে শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের আদেশের অংশবিশেষের বৈধতা নিয়ে হাই কোর্টে রিভিশন মামলা করেন কলকারখানা অধিদপ্তরের আইনজীবী। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়।
শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সেই আদেশ কেন বাতিল হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। ইউনূসসহ চারজন এবং রাষ্ট্রের পক্ষে ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
সেই সঙ্গে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় সাজার রায় থেকে অব্যাহতি পাওয়া মুহাম্মদ ইউনূসকে বিদেশ যাওয়ার সময় আদালতকে অবহিত করে যেতে বলা হয়।
সেই রুলের শুনানি শেষে ১৮ মার্চ রায় ঘোষণা করে হাই কোর্ট।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করার অভিযোগ আনা হয়।
পুরনো খবর
ইউনূসের দণ্ড স্থগিতে ট্রাইব্যুনালের আদেশ অবৈধ: হাই কোর্ট
শ্রমিক ঠকানোর দায়ে নোবেলজয়ী ইউনূসের ৬ মাসের সাজা