মঙ্গলবার ঘটনা নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছে কোম্পানিটি।
Published : 24 Apr 2025, 12:19 AM
কোহিনূর কেমিক্যাল কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড কখনই কোনো ধর্মীয়, সামাজিক অথবা জাতীয়তার প্রতি যেকোনো উপায়ে ’বিদ্বেষমূলক কথা বা আচরণ’ সমর্থন করে না।
এ বিষয়ে কোম্পানিটি ‘শূন্য সহিষ্ণু নীতি’ অবলম্বন করে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে।
এতে বলা হয়, দেশের প্রচলিত আইনকে সার্বিকভাবে ধারণ করে এবং এটি রক্ষায় বদ্ধ পরিকর কোহিনূর কেমিক্যাল।
বুধবার কোম্পানির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এস ভি পি-ব্র্যান্ড) গোলাম কিবরিয়া সরকারের স্বাক্ষরে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেছে কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড।
মহানবীকে (স.) নিয়ে ‘কটূক্তি’ করার অভিযোগে এক সহকর্মীর ফাঁসির দাবিতে মঙ্গলবার সড়ক অবরোধ করেছিলেন কোহিনূর কেমিক্যালের কর্মীরা।
এ নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর প্রচারের পর প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে তুলে ধরে কোম্পানির তরফে বলা হয়েছে, এ কারণেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জাতির সামনে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা হল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি বাংলাদেশের ৭০ বছরের অধিক পুরনো দেশীয় ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। এটি দেশের নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্তের ক্রয় ক্ষমতার ভেতরে গুণগত মান সম্পন্ন সাবান, প্রসাধনী সামগ্রী ও ডিটারজেন্ট উৎপাদন ও বিপননের মাধ্যমে চাহিদা পূরণ করে।”
প্রতিষ্ঠানটিতে সকল ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল এবং সকল ধর্মের ও জাতির মানুষ অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কাজ করছে তুলে ধরে বলা হয়েছে, “দেশের কর্মসংস্থানে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যেহেতু, বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ, তাই স্বভাবতই এই কোম্পানিতে মুসলমান কর্মকর্তা-কর্মচারীর আধিক্য। সেই জন্য প্রতিষ্ঠানটির ভিতরে একটি মসজিদ আছে যেখানে পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে নামাজ আদায় করা হয় এবং অন্যান্য ধর্মীয় কর্মকান্ড পরিচালিত হয়।”
ঘটনার ব্যাখ্যায় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “গত ২০ এপ্রিল একজন কর্মকর্তা তার একজন অধীনস্থ সহকর্মীর সঙ্গে ধর্মীয় বিষয় আলোচনার মধ্যে কিছু আপত্তিকর প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন, যা স্বভাবতই একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে।”
মঙ্গলবার দুপুরে সে ঘটনা শ্রমিকেরা প্রশাসনকে জানায় তুলে ধরে বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রত্যক্ষদর্শীদের শুনানি করে ঘটনার সত্যতা প্রমাণ পান। ওই কর্মকর্তাকে ‘বহিষ্কারাদেশ’ দিয়ে কোম্পানির প্রশাসন তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তরের আশ্বাস দেয়।
পরে কিছু বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঘটে এবং বিশৃংখলার সৃষ্টি করে বলে প্রতিষ্ঠানটি জানায়।
এই অবস্থায় পাশের বিভিন্ন মসজিদের এবং মাদ্রাসার ইমাম ও শিক্ষকরা একত্রিত হয়ে ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সবাইকে শান্ত ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার পরামর্শ দেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
কোম্পানিটি বলেছে, পুলিশ, সামরিক বাহিনী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মিলে সবাইকে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেওয়া হয়। সকলের প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। কোম্পানির প্রশাসন সেই কর্মকর্তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি সম্পূর্নভাবে তাদের ব্যক্তিগত আলাপচারিতা, যাতে প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানায় কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সামরিক বাহিনী এবং ধর্মীয় ও স্থানীয় নেতাসহ সাধারণ মানুষের প্রতি সুষ্ঠ ও সুন্দর সমাধানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।