এখন থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়াও কোন দরপত্র আহ্বান করা হবে না, বলেন তিনি।
Published : 07 Dec 2024, 07:35 PM
সরাসরি চুক্তির বদলে ৪০টি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে জানিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, এসব প্রকল্পে জমির ব্যবস্থা সরকারই করবে।
‘জ্বালানির সহনীয় মূল্য ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ’ রাখার বিষয়ে শনিবার ঢাকার মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “পর্যায়ক্রমে ৪০টি সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে এবং এ ধরনের প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান সরকার থেকে করা হবে।”
জমি কোত্থেকে আসবে, সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, “সরকারি কিছু সংস্থা যেমন: বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রেল, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক বিভাগের অনেক জমি আছে, যেটা ব্যবহৃত হচ্ছে না, সেখানে এ ধরনের সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প হবে।”
নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য ১৫ বছরের কর অব্যাহতি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
প্রতিযোগিতার অভাব এবং কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে বেশি দামে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি কিনতে হচ্ছে বলেও দাবি করেন ফাওজুল।
তিনি বলেন, “গ্রাহকরা প্রতি ইউনিটের বিদ্যুতের গড় মূল্য ৮ টাকা ৫৫ টাকা প্রদান করলেও সরকার ১২ থেকে ২৫ টাকায় কিনে থাকে।
“এলএনজি আমদানিতে ৭০ টাকা খরচ পড়লেও শিল্পখাতে ৩০ টাকা হারে সরবরাহ করা হচ্ছে। মূল্যের এ পার্থক্যটা সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।”
জ্বালানি খাতে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “দেশের মানুষের মাথাপিছু ভর্তুকির পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার টাকা।”
এখন থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতা ছাড়াও কোন দরপত্র আহ্বান করা হবে না বলেও জানান তিনি।
ভোলায় প্রায় ৭০ সিএমএফএফটি গ্যাস মজুদ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “যা উত্তোলনে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান জানানো হবে।”
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, “বিগত ৫০ বছরে আমাদের অর্থনীতি কৃষি নির্ভর থেকে শিল্প ও সেবা খাত নির্ভর হয়ে উঠেছে, তাই এখন জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ ও সহনীয় মূল্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন। জ্বালানি ব্যবহারে আমাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। ”
দেশি কয়লা উত্তোলনে গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলেও মত দেন তিনি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তামিম।
তিনি বলেন, “দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ ব্যবহারিক হবে না, বরং এক্ষেত্রে ৩ থেকে ৫ বছরের কর্মপরিকল্পনা অধিক কার্যকর হবে।”
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ইজাজ হোসেন, কনফিডেন্স গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান করিম, বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. নূরুল আক্তার, আইএফডিএল বাংলাদেশের অংশীদার শাহওয়ার জামাল নিজাম এবং বিএসআরএম-এর হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স সৌমিত্র কুমার মুৎসুদ্দি।