“বাংলাদেশ এখন আবার ব্যবসায় ফিরেছে এবং তা বড় পরিসরে,” বলেন ইউনূস।
Published : 24 Apr 2025, 02:39 PM
বাংলাদেশে বিনিয়োগ টানতে কয়েকজন বিদেশি বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ।
বুধবার রাতে কাতারের রাজধানী দোহায় এ বৈঠক হয় বলে বাসসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বৈঠকে মালদ্বীপের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী, মালয়েশিয়ার রাজপরিবারের একজন সদস্য, মালয়েশিয়ার সাবেক একজন মন্ত্রী, কাতারের রাজপরিবারের একজন সদস্য, শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকার এবং কয়েকজন ধনী প্রবাসী বাংলাদেশি উপস্থিত ছিলেন।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশকে একটি উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তর করতে চায় এবং সব ধরনের বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়।
এই অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশ আকর্ষণীয় বিনিয়োগ সুবিধা প্রদান করছে মন্তব্য করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশ হতে চাই।”
বিনিয়োগকারীরা উৎপাদন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি, ব্যাংকিং ও পর্যটন- বিশেষ করে কক্সবাজারের রিসোর্ট জোনে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাইয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ সফর এবং বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
কাতারের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের আহ্বান
এদিকে কাতারের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, আপনারা এ সুযোগ নিতে পারেন।’
কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে বুধবার রাতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ এখন আবার ব্যবসায় ফিরেছে এবং তা বড় পরিসরে। আমরা আপনাদের অংশীদারিত্ব চাই।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে এবং একটি দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সম্ভাব্য কাতারি বিনিয়োগকারী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে বলেন, “আপনি যদি কখনো বাংলাদেশকে বিনিয়োগের গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করেন, তাহলে এখনই সম্ভবত সবচেয়ে ভালো সময়।”
অনুষ্ঠানে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে, তখন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনাদায়ী ঋণ ছিল, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ৬০০ মিলিয়ন ডলারে। এর মধ্যে কাতার এনার্জির কাছে ২৫৪ মিলিয়ন ডলারের বকেয়া ছিল, যা বুধবারের মধ্যে শূন্যে নেমে এসেছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফোরাম কাতারের সভাপতি আজাদ আশরাফ। কাতারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি সালেহ মাজেদ আল খালাফি, নেক্সট স্মার্ট সলিউশনসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আলি বেন ফার্জ, কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলামসহ অন্যান্যরা বক্তব্য দেন। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।