শেখ হাসিনা না হলে এত উন্নয়ন সম্ভব হত না: ড. বিনায়ক

“শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম করে পাস করিয়েছেন,” বলেন ফরাসউদ্দিন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2023, 06:16 PM
Updated : 9 May 2023, 06:16 PM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘দৃঢ় মানসিকতা’ এবং ‘অসাধারণ নেতৃত্বের’ কারণেই বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান-বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।

তিনি বলেছেন, “গত ১২ বছরে বাংলাদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে, লিডারশিপ বোঝা না গেলে এই উন্নয়ন বোঝা যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্ব না হলে এই উন্নয়ন সম্ভব হত না।”

মঙ্গলবার ঢাকার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘দেশ রূপান্তরের কারিগর শেখ হাসিনা’ শীর্ষক বইয়ের পরিচিতি ও প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শেখ হাসিনার দৃঢ় মানসিকতার বর্ণনা দিতে গিয়ে ২০০৭ সালের একটি ঘটনা তুলে ধরেন ড. বিনায়ক সেন।

“তখন আমি বিশ্ব ব্যাংকে কাজ করি। সেসময় বাংলাদেশে আবাসিক প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন শেষে ক্রিস্টিন ওয়ালিক ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাংকের গভর্ন্যান্স অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করছেন। আমিও সেই দপ্তরেই আছি।

“তো একদিন আমি শেখ হাসিনার সাথে দেখা করতে যাব। যাওয়ার সময় আমাকে ক্রিস্টিন ওয়ালিক বলল যে, ‘তুমি হন হন করে কোথায় যাচ্ছ?’ আমি বললাম, ‘শেখ হাসিনা ওয়াশিংটন এসেছেন, আমি দেখা করতে যাচ্ছি’। সে বলল যে, ‘সি ডাজনট হ্যাভ অ্যানি ফিউচার’। তখন আমি বল্লাম, ‘কেন?’ তখন সে বলল, ‘সি উইল নট বি অ্যালাউড টু রিটার্ন ব্যাক’।”

অর্থনীতিবিদ বিনায়ক বলতে থাকেন, “এরপর আমি শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে ক্রিস্টিনের সেই গল্প বললাম। তখন তিনি আমাকে বলেন, ‘তারা আমাকে চেনে না’।”

এরপর নানা হুমকির মধ্যেও দেশে এসে কারাবরণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এরপর মুক্তি পেয়ে নির্বাচন করেন, বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফেরেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন তার বড় মেয়ে শেখ হাসিনা।

দৃঢ়চেতা মানসিকতার কারণেই তা সম্ভব হয়েছিল মন্তব্য করে অনুষ্ঠানে সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, “৭ মে ১৯৮১ এবং ২০০৭ সালের অক্টোবরে দেশে ফেরা- তার দৃঢ় মানসিকতার কারণেই সম্ভব হয়েছিল।

“…বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনাকে পরস্পরের পরিপূরক হিসেবে দেখি।”

বঙ্গবন্ধুর এই ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বলেন, “শেখ মুজিব বাংলাদেশকে একটি অনুন্নত দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে উন্নীত করেছেন। আর শেখ হাসিনা সেখান থেকে উন্নয়নশীল দেশে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম করে পাস করিয়েছেন।

“শেখ মুজিব জাতিসংঘে ঐতিহাসিক বিশ্ব জাগরণী ভাষণ দেওয়ার পরপরই বলেছেন, ‘আমার কিন্তু ভারতের সঙ্গে, বার্মার সঙ্গে পানি নিয়া বড় ঝামেলা আছে। তোমরা আমার এই চিঠিটা নাও সময় মতো সাহায্য করিও’।”

সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণ হয় দাবি করে তিনি বলেন, “ওই চিঠির পর বছরের পর বছর গেছে, কিছু করে নাই। শেখ হাসিনা এসে আবার এটাকে ধরেছে।“

শেখ মুজিবের অসমাপ্ত কাজই তার মেয়ে শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন উল্লেখ করে ফরাসউদ্দিন বলেন, “১৯৭২ সালর ২৬ মার্চ এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার একটি লোকও যদি না খেয়ে থাকে, আমার একটি লোকও যদি ছায়ার নিচে না থাকে, আমার একটি লোকও যদি বস্ত্রহীন হয়, আমার স্বাধীনতা বিফল হয়ে যাবে।

“শেখ হাসিনা অক্ষরে অক্ষরে প্রোগ্রাম ধরে ধরে বাস্তবায়ন করছেন।”

অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. অধ্যাপক শামসুল আলম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আব্দুল বায়েস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।