ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানোর দাবি ‘যৌক্তিক’ এবং তিনি এসব দাবির সঙ্গে ‘একমত’।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2024, 10:58 AM
Updated : 28 March 2024, 10:58 AM

ভাতা বাড়ানো, বকেয়া ভাতা পরিশোধসহ চার দাবিতে চার দিন ধরে কর্মবিরতিতে থাকা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে’ আপাতত কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।

পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলছেন, আপাতত এক মাসের জন্য তারা কর্মসূচি স্থগিত রাখছেন। দাবি পূরণ না হলে ঈদের পর আবারও কর্মবিরতিতে যাবেন।

বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিবদের এ কথা বলেন ডা. জাবির।

তিনি বলেন, "স্যার (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) আমাদের আশ্বস্ত করেছেন রেসিডেন্ট, নন রেসিডেন্ট এবং এফসিপিএস ট্রেইনি যারা আছেন, তাদের বকেয়া ভাতা পরিশোধ করা হবে। এছাড়া আগামী এক মাসের মধ্যে আমাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সুনির্দিষ্ট তথ্য জানানো হবে। ভাতা কত হবে এবং বাড়বে সেই আশ্বাস স্যার দিয়েছেন। এজন্য আমরা আগামী এক মাসের জন্য আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।"

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেন, চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানোর দাবি ‘যৌক্তিক’ এবং তিনি এসব দাবির সঙ্গে ‘একমত’।

“বর্তমান বাজারে বেতন না বাড়ালে তাদের জন্য জীবনধারণ করা কষ্টকর হয়ে যাবে।আমি প্রথমদিন থেকেই তাদের দাবির সঙ্গে একমত। এটা কোনো অযৌক্তিক দাবি না। এই চিকিৎসকরাই হাসপাতালের মূল চালিকাশক্তি।

“বিষয়টি নিয়ে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি অত্যন্ত সদয়ভাবে বিষয়টি শুনেছেন। আমি আগেই সামারি তাকে দিয়ে এসেছি। তিনি বলেছেন দাবিগুলো বাস্তবায়নে তিনি কাজ করবেন, চিকিৎসকদের কাজে ফিরে যেতে বলেছেন।"

পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনিদের ভাতা ৫০ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন চিকিৎসকরা। গতবছর ওই ভাতার পরিমাণ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা হয়। তবে তাতে তারা সন্তুষ্ট নন।

ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ১৫ হাজার টাকা ভাতা পান, তারা সেটি ৩০ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়ে আসছেন।

গত শনিবার চার দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেন চিকিৎসকরা। পরে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন; রোববার পর্যন্ত সময় চান তিনি।

কিন্তু দাবি পূরণের সুনির্দিষ্ট দিন তারিখ পেয়ে রোববার থেকে সারা দেশে কর্মবিরতি শুরু করেন ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

এফসিপিএস, রেসিডেন্ট, ননরেসিডেন্ট চিকিৎসকদের বকেয়া ভাতা পরিশোধ করা; বিএসএসএমইউর অধীনে ১২টি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের রেসিডেন্ট এবং ননরেসিডেন্ট চিকিৎসকদের ভাতা আবার চালু করা এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন সংসদে পাস ও বাস্তবায়ন করার দাবিও রয়েছে চিকিৎসকদের চার দফা দাবির মধ্যে।

দেশে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসক আছেন প্রায় আট হাজার, ইন্টার্ন চিকিৎসক আছেন চার হাজার। এই চিকিৎসকরা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন হাসপাতালে জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের পরামর্শ ও নির্দেশনায় অস্ত্রোপচারসহ সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দেন।

তারা ধর্মঘটে যাওয়ায় অনেক হাসপাতালের নিয়মিত কার্যক্রম সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়। অতি জরুরি না হলে অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখা হয় কোনো কোনো হাসপাতালে। 

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার আবারও আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। সেখান থেকেই কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা এল।