এ বছর হজ পালনে গিয়ে সৌদি আরবে ৪৪ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন।
Published : 24 Jun 2024, 01:05 PM
হজ পালন শেষে এ পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ১১ হাজার ৬৪০ জন বাংলাদেশি। তিনটি এয়ারলাইনসের ৩০টি ফিরতি ফ্লাইটে তারা দেশে ফেরেন।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের রোববার রাতের সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৩০টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স আটটি, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স ১০টি, আর ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স ১২টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
বাংলাদেশ থেকে এ বছর ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ হজে যান। মোট ২১৮টি ফ্লাইটে তারা সৌদি আরবে পৌঁছান। গত ৯ মে চলতি বছরের হজ ফ্লাইট শুরু হয়, শেষ হয় ১২ জুন।
এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১০৬টি ফ্লাইটে ৪০ হাজার ৯৬৩ জন, সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স ৭৫ টি ফ্লাইটে ৩০ হাজার ৭৬ জন, আর ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স ৩৭টি ফ্লাইটে ১৪ হাজার ১৮৬ জন যাত্রী পরিবহন করে।
এ বছর হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় ১৫ জুন। আর, সৌদি আরবে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয় ১৬ জুন।
হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয় ২০ জুন, আর শেষ হবে ২২ জুলাই।
বাংলাদেশ থেকে ২৫৯টি এজেন্সি এ বছর হজ কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৬১টি হজ এজেন্সিকে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
হজ পালন এবং হজের ব্যবস্থাপনা পরিদর্শনে গত ৮ জুন দেশত্যাগ করেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। সে সময় যেসব ব্যাংক হজযাত্রীদের ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে সেমব ব্যাংক ও এজেন্সির তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।
৪৪ জনের মৃত্যু
এ বছর হজ পালনে গিয়ে সৌদি আরবে ৪৪ জন বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৩৫ জন আর নারী ৯ জন।
এর মধ্যে মক্কায় ৩৩ জন, মদিনায় ৪ জন, জেদ্দায় ১ জন, মিনায় ৬ জন মারা গেছেন।
সর্বশেষ ঢাকার ডেমরার বাসিন্দা সৈয়দ তামজেদ আলী মক্কায় মারা যান। ৬৭ বছর বয়সী তামজেদ আলী ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সৌদি আরবের মক্কায় পৌঁছেছিলেন।
সৌদি আরবের হজ সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী, অন্য দেশ থেকে কোনো ব্যক্তি হজ করতে গিয়ে যদি মারা যান, তার লাশ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয় না। ওই ব্যক্তির মরদেহ সৌদি আরবে দাফন করা হয়।
এক্ষেত্রে মৃতের পরিবার হজযাত্রীর মরদেহ দেশে পাঠানো বা এই সংক্রান্ত কোনো সুপারিশ সৌদি সরকারকে করতে পারবেন না। আর করলেও তা সৌদি সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না বলে আইনে উল্লেখ আছে।
হজযাত্রীদের কেউ যদি মক্কায় মারা যান, তাহলে মক্কার রুশাইফায় লাশের গোসল ও কাফনের ব্যবস্থা করা হয়।
আর মদিনা ও জেদ্দায় মারা গেলে গোসল ও কাফনের আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে।
হজ পালনকারীদের লাশ বহন করার জন্য সৌদি সরকারের পক্ষ থেকেই ফ্রিজার ভ্যানের ব্যবস্থা থাকে।
একইভাবে মক্কা, মিনা ও মুজদালিফায় অবস্থানরত কোনো হজযাত্রী মারা গেলে মসজিদুল হারাম বা কাবা শরিফে জানাজা হয়।
আর মদিনায় মারা গেলে মসজিদে নববীতে জানাজা হয়। এছাড়া জেদ্দা বা অন্য কোন স্থানে হাজীর মৃত্যু হলে সেখানকার স্থানীয় মসজিদে তার জানাজা হয়ে থাকে।
মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশ বা মৃতের জন্মভূমির সরকারের লাশ দাফনের পুরো প্রক্রিয়ায় কোনো খরচ করতে হয় না। সৌদি সরকারই সব খরচ বহন করে।