“বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে,” বলছে পুলিশ।
Published : 12 Mar 2025, 11:03 PM
রাজধানীতে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে’ পদযাত্রা থেকে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর ১২ নেতার নামে মামলা হয়েছে।
রমনা থানায় এসআই আবুল খায়ের মঙ্গলবার রাতে ওই মামলা করেন জানিয়ে ওই থানার ওসি গোলাম ফারুক বলছেন, এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
মামলায় আসামি করা হয়েছে, অং অং মারমা, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ইডেন কলেজ শাখার সভাপতি সুমাইয়া শাহিনা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য আদ্রিতা রায়, ছাত্র ফেডারেশনের সদস্য আরমান, ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু, ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা মহানগরের সভাপতি আল আমিন রহমান, বাম ছাত্র সংগঠনের কর্মী রিচার্ড, ছাত্র ফেডারেশনের হাসান শিকদার, ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সীমা আক্তার, ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌকত আরিফ, ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্পাদক মাঈন আহম্মেদ এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহাম্মদ চৌধুরীকে।
এজাহারে পুলিশের অভিযোগ, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের নিরাপত্তা ও রাস্তায় যানবাহন চলাচলের স্বার্থে বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করতে অনুরোধ করলে তারা রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনারসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর চড়াও হয়। তারা মারমুখী ও উদ্ধত আচরণ করতে থাকে।
“বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তাদের হামলায় রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ সাতজন পুলিশ সদস্য আহত হন।”
মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণ ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের বিচারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে শাহবাগ হয়ে পদযাত্রাটি ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেডে ধাক্কাধাক্কি করলে পুলিশ কয়েকদফা লাঠিপেটা করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেন। আন্দোলনকারীরা সেখানেই বসে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পদযাত্রা ঘিরে পুলিশের বাধা দেওয়ার সময় উল্টো পুলিশ সদস্যদের আহত করার অভিযোগ করা হয় আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রা নামে নারী-পুরুষসহ ৬০-৭০ জনের বিক্ষোভকারী দল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা অভিমুখে যাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে বাধা দেয়। সেসময় ওই পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা নারীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে।
“নিকটবর্তী স্থানে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করলে তারা উল্টো পুলিশের উপর চড়াও হয়ে উদ্ধত ও মারমুখী আচরণ করে। এসময় বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নারীদের নখের আঁচড়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়।”
ঘটনার বর্ণনায় পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে লিপ্ত হয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়।
“এসময় তাদের হামলায় রমনা জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন গুরুতর আহত হন। এ ছাড়া হামলাকারীদের আঘাতে রমনা ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলম, দুই নারী পুলিশ সদস্য এবং তিনজন পুরুষ কনস্টেবল আহত হন। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের মাধ্যমে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”
আরও পড়ুন-
ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় বাধা: নখের আঁচড়ে আহত হওয়ার কথা বলল পুলিশ