এর মধ্যেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে আসছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান।
Published : 05 Aug 2024, 02:41 PM
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ঢাকামুখী লং মার্চে রাজধানীতে প্রবেশ করেছে লাখো জনতা।
বেলা সাড়ে ১১টার পর উত্তরা-আজমপুর থেকে যাত্রা শুরু হওয়া এই জনস্রোত তিন ঘণ্টায় বনানী পার হয়। ওদিকে প্রগতি সরণি দিয়েও হাজারো মানুষ তখন যাচ্ছিল শাহবাগের দিকে।
নানা বয়সি, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ আছেন এই জনস্রোতে। তাদের অনেকের হাতে পতাকা, কারও হাতে লাঠি দেখা গেছে। কাউকে আবার ‘ভি’ চিহ্ন দেখিয়ে বিজয়োল্লাস করতে দেখা যায়।
কারফিউয়ের দায়িত্বে থাকা সেনা সদস্যরা আন্দোলনকারীদের বাধা দিচ্ছেন না। কোথাও কোথাও সোনবাহিনীর সঙ্গে হাতে মেলাতে, কোলাকুলি করতেও দেখা গেছে আন্দোলনকারীদের।
ঢাকার এই দৃশ্যপট মনে করিয়ে দিচ্ছে ১৯৯৬ সালের ৩১ মার্চের পরিস্থিতির কথা, যেদিন তীব্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
এর মধ্যেই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে আসছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। তার আগে সেনা সদর দপ্তরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে তিনি বৈঠকে বসেছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল বাশার সাজ্জাদ উত্তরা থেকে জানান, সকাল সাড়ে ১১টার পরে কারফিউ অমান্য করে উত্তরা এলাকায় জড়ো হতে থাকেন নানা পেশার মানুষ। তারা আজমপুর এলাকায় পৌঁছালে ব্যারিকেড সরিয়ে নেয় র্যাব ও সেনা সদস্যরা। এর এক ঘণ্টা বাদে তারা রাজলক্ষ্মীর দিকে পৌঁছায়। বেলা ৩টার দিকে তারা ফার্মগেট হয়ে শাহবাগের দিকে যাচ্ছিলেন।
বেলা পৌনে ৩টার দিকে গাবতলী থেকে পুলিশ সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সড়ক। তাতে গাবতলী সেতু এলাকায় আটকে থাকা ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ শুরু করেছে।
এদিকে শাহবাগে জনতার ঢল নেমেছে। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রাসেল সরকার জানিয়েছেন,
সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে শাহবাগ থানার সামনে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ দখল করেন। পরে চতুর্দিক থেকে মিছিল নিয়ে সেখানে আসেন আন্দোলনকারীরা।
শাহবাগে বিপুল পরিমাণ সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ রয়েছে। তবে তারা আন্দোলনকারীদের বাধা দিচ্ছেন না।
বিক্ষোভে আন্দোলনকারীরা ‘এই মুহুর্তে দরকার, সেনাবাহিনী সরকার’, ‘দফা এক দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’, ‘এক দুই তিন চার, শেখ হাসিনা গদি ছাড়’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’ ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, তারা সেনাপ্রধানের বক্তব্যের অপেক্ষায় আছেন। সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করলে না করলে আন্দোলনকারীরা গণভবন দখল করবেন।