“উনার সঙ্গে আমার, নেতৃবৃন্দের সঙ্গে হট টক হয়েছে; কেউ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেনি,” বলেন ফরহাদ হোসেন।
Published : 27 Sep 2024, 12:42 AM
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) সহকারী সচিব জাহিদ হাসানকে তার কক্ষে ঢুকে অধস্তন কর্মচারীরা শারীরিকভাবে হেনস্তা ও লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবারের ওই ঘটনার পর জড়িতদের শাস্তি চেয়ে বৃহস্পতিবার ডিএনসিসির বিভিন্ন দপ্তরের ৫৩ কর্মকর্তা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খাইরুল আলমের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, সম্প্রতি ডিএনসিসির কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী ‘অনৈতিক সুবিধা পেতে’ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কক্ষে গিয়ে ‘শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার হুমকি’ দিচ্ছেন। বুধবার সাড়ে ৩টার দিকে লাইসেন্স ও বিজ্ঞাপন সুপারভাইজার শেখ শওকত হোসেন ও পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন গিয়ে সহকারী সচিব জাহিদ হোসেনকে ‘লাঞ্ছিত’ করেন।
“জাহিদ হোসেনের শার্টের কলার ধরে টানাটানি করা হয়। তারা তাকে মারতে উদ্যত হন, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় ওই কক্ষে থাকা ডিএনসিসির নিরাপত্তা কর্মকর্তা, সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা এবং পরিবহন শাখার সহকারী ব্যবস্থাপককে জোর করে বের করে দেওয়া হয়।”
স্মারকলিপিতে বলা হয়, “বিভিন্ন আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের কক্ষে গিয়ে চাপ সৃষ্টি ও প্রাণনাশের হুমকির মাধ্যমে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। এতে ডিএনসিসির কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আতঙ্কে আছে।”
অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিজ্ঞাপন সুপারভাইজার শেখ শওকত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি ওই ঘটনার সময় ছিলাম না। এ বিষয়ে কিছু শুনিওনি, জানিও না।”
জানতে চাইলে পরিচ্ছন্ন পরিদর্শক ফরহাদ হোসেন বলেন, “বিগত সরকারের আমলে চুরির দায়ে চাকরিচ্যুত ডিএনসিসির শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুর রশিদের ফাইলের বিষয়ে জানতে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্য হয়েছে, তবে কাউকে লাঞ্ছিত করা হয়নি।
“তার ফাইলে সাবেক মেয়র মহোদয় জানুয়ারি মাসে সই করেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মেয়র স্যার সচিব স্যারের কাছে, সচিব স্যার সাধারণ প্রশাসনে পাঠিয়েছিলেন। গতকাল (বুধবার) আবার ওই ফাইলটা সচিব স্যারের দপ্তরে গেছে। কীভাবে গেছে আমি জানি না। মিরপুর, কারওয়ানবাজার থেকে আমার নেতাকর্মীরা খোঁজ পেয়ে নগরভবনে এসে আমাকে ডেকেছে। পরে আমি সেখানে গেছি।”
ফরহাদ হোসেন বলেন, “আমি বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাইলাম ফাইলটা কোথায়, একটু খোঁজ নেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করছিলেন। এটা নিয়েই উনার সঙ্গে আমার, নেতৃবৃন্দের সঙ্গে হট টক হয়েছে। উনাকে কেউ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেনি। সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে যদি পান উনাকে লাঞ্ছনা করা হয়েছে, তাহলে আপনারা লিখবেন।”
এ ব্যাপারে জাহিদ হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার রুমে কোনো সিসি ক্যামেরা নেই। এজন্য সেখানকার কোনো ভিডিও পাওয়া যাবে না।
“তারা আমাকে লাঞ্ছিত করেছে। তারা যে আমার রুমে দলবেঁধে ঢুকেছে সেটা রুমের সামনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাবে। লাঞ্ছনা করেছে এই ফুটেজ পাওয়া যাবে না। কারণ রুমের ভেতর ক্যামেরা নেই। ওরা আমার রুমে থাকা দুজন কর্মকর্তাকেও জোর করে বের করে দিয়েছে।”
জানতে চাইলে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খাইরুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরের পর অফিসের বাইরে ছিলাম, এ কারণে এখনও স্মারকলিপিটি দেখিনি। তবে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শৃঙ্খলার বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”