আধিপত্য বিস্তার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিওব্যাগ সরবরাহের কাজ পাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সিরাজগঞ্জে যুবদল ও যুবলীগ সমর্থক দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
Published : 03 Jul 2015, 06:38 PM
সদর থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ঘের পর ঘটনাস্থল থেকে লাইসেন্স করা একটি শটগান জব্দ করেছে পুলিশ।
ওই শটগানের মালিক জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহ-সাধারণ সম্পাদক ঠিকাদার কামরুল হাসান হিল্টন। তিনি জেলা যুবদলের সভাপতি আবু সাঈদ সুইটের ছোট ভাই এবং নিজেও যুবদল সমর্থক বলে পরিচিত।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা জানান, নদী তীর রক্ষায় জরুরি জিওব্যাগ সরবরাহ করার কাজ নিয়ে হিল্টন ও তার লোকজনের সঙ্গে স্থানীয় ধানিবান্দি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরিফ হোসেনের সমর্থকদের উত্তেজনা চলছিল গত কয়েকদিন ধরে।
কাজিপুর ও সদর উপজেলার শিমলায় নদী ভাঙন কবলিত তীর রক্ষায় জেলখানা ঘাটে ৫০ হাজার জিওব্যাগ সংরক্ষণ করছে পাউবো। ঠিকাদার হিল্টনের তত্ত্ববধানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর জেলখানা ঘাটে ট্রাক থেকে সেই জিওব্যাগ নামানোর কাজ চলছিল।
এ সময় যুবলীগ নেতা আরিফ ও তার সমর্থকরা হিল্টনকে বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তার পাউবো কার্যালয় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় হিল্টনকে শটগান থেকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়।
গুলি ছোড়ার কথা স্বীকার করে হিল্টন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২০/২৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার উপর চড়াও হয়েছিল। আমি আত্মরক্ষায় লাইসেন্স করা শটগান দিয়ে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ি। এরপর তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।”
অন্যদিকে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা আরিফের দাবি, তিনিসহ ২০/২২ জন যুবলীগ নেতাকর্মী পাউবো কার্যালয় এলাকায় গেলে হিল্টন ও তার বড় ভাই সুইট দলবল নিয়ে ধাওয়া ও গুলি করে।
আরিফের অভিযোগ, হিল্টন পাউবোতে ‘আধিপত্য বিস্তার করে নানা অপকর্ম’ চালিয়ে যাচ্ছেন। পাউবো কার্যালয়ের ভেতরে ‘অবৈধভাবে’ নিজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গুদাম তৈরি করেছেন তিনি।
টেন্ডার ছাড়াই হিল্টন জিও ব্যাগ সরবরাহের কাজ করছিলেন অভিযোগ করে স্থানীয় এই আওয়ামী লীগ নেতা বলছেন, এসব বিষয়ের প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর হামলা করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, জিওব্যাগ ফেলার কাজে টেন্ডার হয়েছে। পিডিএসএল-জেভি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে ঠিকাদার লিয়াকত হোসেন কাজ পেয়েছেন।
তাহলে যুবদল নেতার ভাই হিল্টন কেন কাজের তদারকি করছে জানতে চাইলে পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, “হিল্টন ওই ঠিকাদারের স্থানীয় প্রতিনিধি হয়ে থাকতে পারেন।”
সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় মামলা করেনি বলে জানান সদর থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম।