আগামী জুন মাসের প্রথম ভাগেই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 17 Feb 2015, 03:51 PM
তবে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন পায়নি বলে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন।
তিনি মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরে তার কার্যালয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “মেয়াদ শেষের আগে চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচন আয়োজনে কোনো বাধা নেই। মধ্য জুন থেকে রোজা শুরু হচ্ছে। সেক্ষেত্রে জুনের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে ভোট করা হবে।”
সর্বশেষ ২০১০ সালের ১৭ জুন ভোটের পর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রথম সাধারণ সভা হয়েছিল ২৬ জুলাই। সেই হিসাবে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে এই নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে ইসির।
নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে এক মতবিনিময় সভায় মে মাসে স্থানীয় সরকারের ওই নির্বাচনের তফসিলের আভাস দিয়েছিলেন।
ইসি সচিব বলেন, উপযুক্ত সময় (ভোটের ৪৫ দিন আগে) রেখে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
‘ডিসিসির সীমানা গেজেট পাইনি’
সীমানা জটিলতার বিষয়টি বাদ দিয়ে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ভোট আয়োজনের প্রস্তুতি সব সময়ই নির্বাচন কমিশনের রয়েছে বলে জানান সচিব সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “ভোটের জন্য অর্থ বরাদ্দ ইতোমধ্যে চাওয়া হয়েছে। ভোটার তালিকাও প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু সীমানা জটিলতা শেষ করে গেজেট পাওয়ার ওপর পরবর্তী করণীয় নির্ভর করছে।”
সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহের বিষয়টি গণমাধ্যমে আসে। ওই বৈঠকে সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত গেজেট হয়ে গেছে ও ইসিতে পাঠানো হয়েছে বলেও প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়।
এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, “মন্ত্রিসভার বৈঠকে ডিসিসি নির্বাচন নিয়ে আলোচনার বিষয়টি আমিও আজ পত্রিকায় দেখলাম। আমার জানা মতে, কোনো গেজেট ইসিতে পৌঁছেনি, আমরা হাতে পাইনি।”
তিনি বলেন, সীমানা নির্ধারণের গেজেট হাতে পেলে চলমান এসএসসি ও আসন্ন এইচএসসি সময়সূচি নিয়ে আলোচনা করে কমিশন ভোটের সময় নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করবে।
সর্বশেষ ২০০২ সালের এপ্রিলে ভোটের পর ২০০৭ সালের মে মাসে অবিভক্ত ডিসিসির নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হয়।
এরপর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সময় দুই বার নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হলেও বিভিন্ন জটিলতায় সে উদ্যোগ ভেস্তে যায়।
এরপর ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বরে ৫৬টি ওয়ার্ড নিয়ে দক্ষিণ ও ৩৬টি ওয়ার্ড নিয়ে উত্তর নামে দুই ভাগ হয় ডিসিসি।
দুই ভাগ করার পর অনির্বাচিত প্রশাসক দিয়ে চলছে ডিসিসি, যদিও স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে আসছে বিভিন্ন মহল।
২০১২ সালে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের ইসি তফসিল ঘোষণা করলেও আইনি জটিলতায় তা স্থগিত হয়ে যায়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ২০১২ সালের ২৪ মে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
২০১৩ সালের মে মাসে নির্বাচনের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ উঠে গেলে নতুন করে তফসিল ঘোষণার উদ্যোগ নেয় নির্বাচন কমিশন।
তবে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে একটি নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হওয়ায় সীমানা জটিলতায় নির্বাচন আবারো ঝুলে যায়। তেজগাঁও সার্কেলভুক্ত সুলতানগঞ্জ ইউনিয়নের ১৩টি পাড়া-মহল্লা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করায় সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রয়োজন পড়ে। স্থানীয় সরকার বিভাগের এ সংক্রান্ত গেজেটের অপেক্ষায় রয়েছে ইসি।