শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের শঙ্কা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে হরতালে দুই দফা পেছানোর পর অবরোধের মধ্যেই শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।
Published : 06 Feb 2015, 08:20 AM
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বাংলাদেশের তিন হাজারে বেশি কেন্দ্রে একযোগে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
পরীক্ষা শুরুর দিন হরতাল না থাকলেও অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল।
টানা পাঁচ দিনের হরতাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেষ হলেও তারপর রাতে সিরাজগঞ্জে একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে আগুন দেওয়া হয়।
প্রথম দিন আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র এবং বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রথম পত্রের পরীক্ষা হচ্ছে।
এছাড়া মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে কুরআন মাজিদ ও তাজবীদ এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এসএসসি ভোকেশনালে সকালে বাংলা-২ (১৯২১) সৃজনশীল এবং বিকালে বাংলা-২ (৮১২১) সৃজনশীল বিষয়ের পরীক্ষায় বসেছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনসংযোগ কর্মকর্তা মোল্লা আহমদ কুদুবদ-দ্বীন জানান, সকালে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আজিমপুর সরকারি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এবার ২৭ হাজার ৮০৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৬ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় বসেছে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের হরতালের কারণে পরীক্ষার শুরুর দিন গত ২ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হয়, শুক্রবার প্রথম দিনের পরীক্ষাগুলো হচ্ছে।
হরতালে এসএসসির দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ৪ ফেব্রুয়ারির পরীক্ষাও পিছিয়ে যায়, যা ৮ ফেব্রুয়ারি শনিবার হবে।
হরতালের কারণে সাপ্তাহিক ছুটির দুই দিন পরপর দুটি বিষয়ের পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
গত ৫ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী বিএনপির লাগাতার অবরোধের ফাঁকে ফাঁকেই হরতাল থাকছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবরোধের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেছে, হরতালের দিন নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পরীক্ষা নেওয়া হবে না।
এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাত লাখ ৩৩ হাজার ২২০ জন ছাত্র এবং ছয় লাখ ৯৯ হাজার ৫২৫ জন ছাত্রী।
গত বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৩২ হাজার ৭২৭ জন অংশ নিয়েছিল, সেই হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৪৬ হাজার ৫৩৯ জন।
এবার আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে ১১ লাখ ১২ হাজার ৫৯১ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলে দুই লাখ ৫৬ হাজার ৩৮০ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে এসএসসি ভোকেশনালে এক লাখ ১০ হাজার ২৯৫ জন পরীক্ষা দেবে।
বাংলা দ্বিতীয় পত্র এবং ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র ছাড়া অন্য সব বিষয়ের পরীক্ষা এবার সৃজনশীল প্রশ্নে হবে। এবারই প্রথম গণিত ও উচ্চতর গণিতের প্রশ্ন হবে ‘সৃজনশীল’ পদ্ধতিতে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। এ ধরনের প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
বিএনপি-জামায়াতের হরতালের কারণে ২০১৩ সালে এসএসসির ৩৭টি বিষয় এবং এইচএসসির ৪১টি বিষয়ের পরীক্ষা পেছাতে বাধ্য হয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
ওই বছরের জেএসসি-জেডিসির ১৭টি বিষয় এবং প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী শিক্ষা সমাপনীর দুটি বিষয়ের পরীক্ষা হরতালের কারণে পিছিয়ে দেওয়া হয়।
এছাড়া গত বছরের শেষ দিকে জেএসসি-জেডিসি এবং প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী পরীক্ষাও বিএনপির হরতালের কবলে পড়লে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা পিছিয়ে যায়।