নির্বাচন প্রতিহতের ডাক দিয়ে ২৯ ডিসেম্বর ‘ঢাকা অভিযাত্রা’ কর্মসূচি ঘোষণার পরদিন পুলিশ ও সরকারের ‘সহযোগিতা’ চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
Published : 25 Dec 2013, 10:55 AM
এদিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বাড়ির আশেপাশে মঙ্গলবার রাত থেকেই পুলিশি পাহারা বাড়ানো হয়েছে।
টানা অবরোধের পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গুলশানে নিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া।
৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ‘প্রহসনের’ নির্বাচন প্রতিহত করতে নতুন কর্মসূচিতে সবাইকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “২৯ ডিসেম্বর সারাদেশ থেকে সক্ষম নাগরিকদের ঢাকা অভিমুখে পদযাত্রা করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
ওই সংবাদ সম্মেলনের ঘণ্টা পাঁচেক পর বাংলামোটরে পুলিশবাহী গাড়িতে পেট্রোল বোমা ছোড়া হলে এক কনস্টেবলের মৃত্যু হলে গভীর রাতে গুলশানের ৮৬ নম্বর সড়কে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাড়ি ‘ফিরোজা’র সামনে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার নূরুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, “সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তার বাসায় আগের চেয়ে দ্বিগুণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।”
এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “মূলত বিরোধী দলীয় নেতার নিরাপত্তার জন্যই এ ব্যবস্থা।”
সেখানে সাধারণ পোশাকেও পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে ২৯ ডিসেম্বরের কর্মসূচি সম্পর্কে জানিয়ে সরকারের ‘সহযোগিতা’ চেয়ে সকালে মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে এক চিঠি পৌঁছে দেয় বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “২৯ ডিসেম্বর নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে গণতন্ত্র অভিযাত্রা কর্মসূচি হবে। এতে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া থাকবেন। আমরা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে এই কর্মসূচি সফল করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা চেয়েছি।”
সেদিন সমাবেশে মাইক ব্যবহারের জন্যও অনুমতি চাওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে। সরকারের ‘সহযোগিতা চেয়ে’ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছেও আলাদা চিঠি দেয়া হচ্ছে বলে ফারুক জানান।
বিএনপির সাংসদ এ বি এম আশরাফউদ্দিন নিজান ও সহ দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীমও এ সময় ফারুকের সঙ্গে ছিলেন।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহতের আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে খালেদা বলেন, “ভোটকেন্দ্রভিত্তিক সংগ্রাম কমিটিগুলোর পাশাপাশি দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনরত সব পক্ষকে নিয়ে অবিলম্বে জেলা, উপজেলা ও শহরে ‘সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষা সংগ্রাম কমিটি’ গঠন করে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনী তামাশা প্রতিহত করুন।”
ঢাকা অভিমুখে এই যাত্রাকে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি (গণতন্ত্রের অভিযাত্রা)’ অভিহিত করে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে সবাইকে ওইদিন নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিতে বলেন ১৮ দলীয় নেত্রী।
তিনি বলেন, “এই অভিযাত্রা হবে প্রহসনকে ‘না’ বলতে, গণতন্ত্রকে ‘হ্যাঁ’ বলতে। এই অভিযাত্রা হবে নির্দলীয়- নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অর্থবহ নির্বাচনের দাবিতে।”
সরকারের উদ্দেশ্যে খালেদা বলেন, “নির্যাতন, গ্রেপ্তার, হয়রানির চেষ্টা করবেন না। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বাধা এলে জনগণ তা মোকাবেলা করবে। পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি দেয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।”