দেহের ৯৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়ার যন্ত্রণা নিয়ে এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ছটফট করছেন মনির। গাড়িচালক বাবা রমজান আলীর প্রহর কাটছে ছেলের পাশে উৎকণ্ঠায়।
বার্ন ইউনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক পার্থ শংকর পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মনিরের শরীরের ৯৫ ভাগ পুড়ে গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।”
বিরোধী দলের ৬০ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিন সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাজীপুরে চান্দনা চৌরাস্তার পূর্ব পাশে জাতীয় আইন কলেজের সামনে একটি কভার্ড ভ্যানে আগুন দেয় হরতালকারীরা।
জয়দেবপুর থানার পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান,ভ্যানটি ছিল রমজান আলীর (৫০)। আর ওই ভ্যানেই ছিল তার ১৫ বছর বয়সি ছেলে মনির।
রমজান আলীর বাড়ি গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার বড়কাঞ্চনপুর গ্রামে। সেখানে মা আর ছোটভাই সহ মনির থাকত। পেশাগত কারণে গাজীপুর শহরে থাকা রমজানের কাছে দুদিন আগে বেড়াতে এসেছিল ছেলে।
রমজান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হরতালে গাড়ি বের করবেন কি না, তা দেখার সকাল ১০টার দিকে তিনি ছেলেকে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে চান্দনা চৌরাস্তায় এসেছিলেন।
“চৌরাস্তার পূর্বপাশে গাড়িটা রেখে আমি একটু বের হয়েছিলাম, মনির গাড়িতে ছিল। দূর থেকে হঠাৎ দেখলাম, ৪-৫ জন যুবক আমার গাড়ির কাছে এসে কিছু পাউডার ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিল।”
এর সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে আগুন ধরে যায়। ছুটে এসে অগ্নিদগ্ধ ছেলেকে গাড়ির ভেতর থেকে বের করে আনেন রমজান। তবে ততক্ষণে ছেলে গায়েও আগুন ধরে যায়।
এরপর অগ্নিদগ্ধ মনিরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান ভ্যানচালক রমজান।
তারা হলেন নেত্রকোনার দুর্গাপুরের শেখ জামাল উদ্দিনের স্ত্রী রহিমা খাতুন (৫০), তার নাতনী সুমী (১০)। তারা দুজনই এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অগ্নিদগ্ধ রহিমা জানান, দুর্গাপুর থেকে ঢাকার উত্তরায় যাওয়ার পথে চৌরাস্তা বাইপাস মোড়ে দুর্বৃত্তরা তাদের বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।
হরতালের মধ্যে সোমবার গাজীপুরে আরো কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। সকাল ৭টার দিকে টঙ্গীর আশ্রাফ টেক্সটাইল মিলের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঢাকাগামী বলাকা সার্ভিসের একটি বাসে আগুন দেয়া হয়।
এর আগে পৌনে ৭টার দিকে সালনার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশে মহাসড়কে একটি মাইক্রোবাসে আগুন দেয়া হয়।