এইচএসসিতে ফল বিপর্যয়ের জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
Published : 03 Aug 2013, 07:53 PM
“এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী আমাদের দেশের কিছু অবিবেচক, দায়িত্বজ্ঞানহীন, অদূরদর্শী রাজনৈতিক নেতৃত্ব; যারা তাদের সংকীর্ণ স্বার্থ হাসিলের জন্য আমাদের নতুন প্রজন্মকে বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছিলেন।”
শনিবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে নিজের হতাশা প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
হরতালের কারণে বিঘ্নিত এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুটোই কমেছে।
এবার পাসের হার ৭৪ দশমিক ৩০ শতাংশ, যা গত বছর ছিল ৭৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ হাজার কমে ৫৮ হাজার ১৯৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের আগে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ফল জানিয়ে আসেন শিক্ষামন্ত্রীসহ শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানরা।
তখন প্রধানমন্ত্রীও পরীক্ষার সময় হরতাল দেয়ায় বিরোধী দলের সমালোচনা করে এই পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের সমবেদনা জানান।
এবারের প্রথম দিনের এইচএসসি পরীক্ষা ছাড়া সবগুলো পরীক্ষাই হরতালের মধ্যে পড়ে। হরতালের ফলে ৩২টি বিষয়ের পরীক্ষাসূচি পরিবর্তন করায় পিছিয়ে যায় ৪১টি পরীক্ষা। চট্টগ্রাম বোর্ডের ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা চার বার পেছাতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।
পরীক্ষা শুরুর আগে শিক্ষামন্ত্রী হরতাল না দিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানালেও তাতে সাড়া মেলেনি।
নাহিদ বলেন, “শুরুতেই বিনয়ের সঙ্গে বললেও ভবিষ্যৎ বংশধরদের গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির কোনো তোয়াক্কাই করেনি।
“হরতাল করে জাতির জন্য কি অর্জন করতে পেরেছেন? কিছুই অর্জন করতে পারেননি। শুধু ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ জীবনকে হতাশার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন।”
শিক্ষার্থীদের ওপর হরতালের প্রভাব তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, এতে তারা হতাশায় ভোগে এবং প্রস্তুতিতেও ব্যাঘাত হয়।
“চাপ ও অনিশ্চয়তার মধ্যে অনেকেই ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারেনি। ফলে পাসের হার কমে গেছে।”
ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকা পাসের হার এবার কমে যাওয়ায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এখান থেকে শিক্ষা নিই যে দেশটা জনগণের। শিক্ষাকে যারা এইটুকু গুরুত্ব দেবে না জাতির জন্য তারা কী কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসবে, এবারই তার প্রমাণ হলে।”
ঘোষণা অনুযায়ী ৬০ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ করে নাহিদ বলেন, এই সরকারের সময়ে পরীক্ষা নেয়া, ফল প্রকাশ, ক্লাস শুরু, বই দেয়া কোনো কিছুতেই একদিনও ব্যত্যয় হয়নি। শিক্ষা খাতে বড় ধরনের শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। ইচ্ছে করলেই কেউ এগুলো পরিবর্তন করতে পারবে না।
“পাসের হার ধারাবাহিকভাবে বাড়ার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো কলকাঠি আছে কি না, তা নিয়ে অনেকে সন্দেহ করত। এবারই তো পাসের হার কমে গেল।”
এইচএসসি ও সমানের পরীক্ষায় ২০০৯ সালে ৭২ দশমিক ৭৮ শতাংশ, ২০১০ সালে ৭৪ দশমিক ২৮ শতাংশ, ২০১১ সালে ৭৫ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং গত বছর ৭৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে।
শিক্ষাসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ফাহিমা খাতুনসহ শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।