শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যারা যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি ও জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি তুলছেন তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেছেন মঞ্চের সংগঠকরা।
Published : 22 Apr 2013, 05:34 AM
নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় ২১ এপ্রিল দুপুর অর্থাৎ বাংলাদেশ সময় রোববার রাত ১২টার পর ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানী, ইতালি, কানাডা, জাপান, ভারত ও বেলজিয়ামসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের শতাধিক সংগঠন এ কনফারেন্সে অংশ নেয়।
নিউ ইয়র্কের জ্যাকসন হাইটস সংলগ্ন গুলশান টেরেস থেকে এ ভিডিও কনফারেন্সের সমন্বয় করেন শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরের আরেক সংগঠক প্রিতম আহমেদ।
ইউএস কমিটি ফর সেক্যুলার ডেমক্র্যাটিক বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন এ কনফারেন্সের আয়োজন করে।
আয়োজক সংগঠনের আহ্ববায়ক নিউ জার্সির একটি শহরের কাউন্সিলম্যান ড. নূরন্নবীর সভাপতিত্বে এ ভিডিও কনফারেন্সের সঞ্চালন করেন সংগঠনের অন্যতম সমন্বয়ক জাকারিয়া চৌধুরী।
কনফারেন্সে আলোচকরা বলেন, আফগান ফেরৎ তালেবানদের নিয়ে হেফাজতে ইসলাম নামের সংগঠনটি গঠিত। জামাত-শিবিরের পক্ষে তারা মাঠে নেমেছে এবং গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে অবান্তর কথাবার্তা বলাবলি করছে।
জামায়াত-শিবিরের মত এরাও একাত্তরের ঘাতকদের বিচার ব্যাহত করার লক্ষ্যে ইসলামকে ঢাল হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে মনে করেন তারা।
বিভিন্ন দেশের সংগঠকরা ইমারন এইচ সরকারকে বলেন, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন পরিচালনায় সর্বাত্মক সহায়তা দিতে তারা প্রস্তুত।
প্রয়োজনে অর্থ সহায়তা দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তারা।
প্রবাসীরা বলেন, বাংলা ব্লগের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে অবস্থানরত দেশপ্রেমিক জনতার অঘোষিত ঐক্য গড়ে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়তে একাত্তরের ঘাতকদের বিচার সম্পন্ন করার দাবির মধ্য দিয়ে এটি ঘটেছে।
ইমরান এইচ সরকার বলেন, শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের পক্ষ থেকে গণজাগরণ নামে সাপ্তাহিক একটি বুলেটিন প্রকাশ করা হবে।
“তার মাধ্যমে আমরা ওদের অপপ্রচারের জবাব দিয়ে যাব।”
তিনি জানান, গণজাগরণ মঞ্চের দাবিগুলো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে গত ২০ এপ্রিল থেকে জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
এ আন্দোলনকে বৃহৎ পরিসরে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য দেশবাসীকে আরো বেশি সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।
ইমরান বলেন, “জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করার জন্য আমরা যে আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম সে ব্যাপারে সরকার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অগ্রগতির কিছুই দেখছি না। তাই আগামী ৪ মে জাতীয় সংসদের সামনে আমরা মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।”
ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিয়ে জাগরণ মঞ্চের আরেক সংগঠক মারুফ রসুল বলেন, “একাত্তরে যে ¯^প্ন হৃদয়ে লালন করে বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন আমরা সেই বাংলাদেশ চাই। এ প্রত্যাশা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে আছি।”
জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করলেই সমস্যার সমাধান হবে- এমনটি ভাবার অবকাশ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ওরা ভিন্ন নামে আসতে পারে। ওদেরকে বাংলাদেশ থেকে চিরতরে নির্মূলের জন্য দরকার দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক আন্দোলন রচনা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে ওদের স্বরূপ অবহিত করতে হবে।”
গণজাগরণ মঞ্চের সঙ্গে একাত্ম হয়ে নিউ ইয়র্কে যে সব ব্যক্তি ও সংগঠন যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে কর্মসূচি পালন করে আসছেন তাদের সমন্বিত উদ্যোগে সম্প্রতি ইউএস কমিটি ফর সেক্যুলার ডেমক্র্যাটিক বাংলাদেশ গড়ে ওঠে।