চট্টগ্রাম, ২৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বহদ্দারহাটে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসে পড়ার জন্য প্রাথমিকভাবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অনভিজ্ঞতা ও অবহেলাকে দায়ী বলে মনে করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. সিরাজুল হক খান।
জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির সঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এ সময় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান খালেদ মামুন চৌধুরীসহ কয়েকজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, “কী ধরনের ত্রুটি রয়েছে তা বিশ্লেষকরা বলতে পারবেন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তা বেরিয়ে আসবে। তবে এ ধরনের কাজে তাদের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। নির্মাণের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।”
“এতো বড় একটি কাজ, অথচ সচেতনতার বড়ই অভাব। এর আগেও একবার দুর্ঘটনা ঘটার পরও কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। পুরোপুরি কেয়ারলেস ছিল সংশ্লিষ্টরা”, যোগ করেন তিনি।
বন্দরনগরীর অন্যতম ব্যস্ত এলাকা বহদ্দারহাটে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভার থেকে শনিবার সন্ধ্যায় তিনটি কংক্রিটের গার্ডার ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় সোমবার সকাল পর্যন্ত ১৩ জনের লাশ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকর্মীরা।
ফ্লাইওভারটি নির্মাণকাজের তদারকি করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এবং নির্মাণ কাজ করছে দুই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার এন্টারপ্রাইজ ও পারিশা এন্টারপ্রাইজ।
গার্ডার ম্যানেজমেন্টের অবহেলা থাকতে পারে উল্লেখ করে সিরাজুল হক বলেন, “আমি বলবো এটা ঘটেছে সতর্কতার অভাবে। জুন মাসে একটা দুর্ঘটনার পর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে কাজ শুরু করা দরকার ছিল”।
এই ফ্লাইওভারেরই একটি গার্ডার গত জুন মাসে ধসের পড়ে। তখন অবশ্য কোনো প্রাণহানি হয়নি।
প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খালেদ মামুন চৌধুরী জানান, আগের দুর্ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কমিটি হয় নি। ক্ষয়ক্ষতিও ছিল না। যার কারণে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগও ছিল না।
তদন্ত কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গার্ডার ধসে পড়া রোধ করতে পর্যাপ্ত ‘স্কাপ হোল্ডার’ না থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, “স্কাপ হোল্ডিং থাকলে গার্ডার ভারসাম্য হারানোর পরও তা আটকে থাকতো। কিংবা ধসে পড়তে আরো সময় নিতো। সেক্ষেত্রে জানমালের এতো ক্ষতি হতো না।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমএইচসি/ইউএস/এসইউ/১৭১০ ঘ.