মঈনুল হক চৌধুরী
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
ঢাকা, মার্চ ০৫ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- নির্বাচনের পর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও দেশের উপজেলা পরিষদগুলোতে সংরক্ষিত নারী সদস্য নির্বাচন হয়নি। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার মাত্র দুই বছর বাকি থাকায় ‘পরোক্ষ ভোটে’ এই নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য কমিশনকে তাগিদ দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
২০০৯ সালে ২২ জানুয়ারি সারাদেশে তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়। এরপর ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচন হওয়ায় এবং আইনি জটিলতার কারণেই সংরক্ষিত নারী সদস্য নির্বাচন আটকে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা পষিদগুলোর মেয়াদ পূর্ণ হতে আর মাত্র দুই বছর বাকি থাকায় স্থানীয় সরকার সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান স¤প্রতি নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মোহাম্মদ সাদিককে চিঠি দিয়ে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ সাদিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উপজেলা পরিষদ আইনের আলোকে বিধিমালা তৈরির কাজ চলছে। আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে বিধিমালা জারি হলে উপজেলা পরিষদে মহিলা সদস্যদের নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
১৯৯৮ সালের উপজেলা পরিষদ আইনে তফসিল আকারে অন্তর্ভুক্ত উপজেলার সংখ্যা ছিল ৪৮০টি। ২০০৯ সালে তা বাড়িয়ে ৪৮১টি করা হয়। ২০১১ সালে সংশোধন করা হয় আইনটি।
বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলররা তাদের মধ্য থেকে একজনকে ভোট দিয়ে উপজেলা পরিষদের নারী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করবেন। আর এই সদস্যদের সংখ্যা হবে উপজেলায় ইউনিয়ন ও পৌরসভাগুলোর মোট নারী সদস্যের এক তৃতীয়াংশের সমান।
২০০৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা নির্বাচনে যে নারী প্রার্থীরা বিজয়ী হয়ে আসবেন তাদের মাধ্যমেই উপজেলার সংরক্ষিত নারী সদস্য নির্বাচন করা হবে। কিন্তু ওই দুটি নির্বাচন শেষ করতেই উপজেলার পাঁচ বছর মেয়াদের অর্ধেকের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে।
দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে নির্বাচন না হওয়ায় আমলতান্ত্রিক জটিলতাকে দায়ী করেন বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যানদের একটি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হোসেন ফুকু।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন তিনি বলেন, “এতোদিন নারী সদস্য না থাকায় উপজেলা পরিষদ পূর্ণাঙ্গ রূপ পায়নি। আমলতান্ত্রিক জটিলতার কারণেই তা হয়নি বলে মনে করি। এরপরও পরিষদকে কার্যকর রূপ দিতে সরকার সব ধরনের উদ্যোগ নেবে বলে আমরা আশা করছি।”
এদিকে সরকার নতুন করে আরো পাঁচটি (সালতা, কালোখালি, বিজয়নগর, তালতলী ও তিতাস) উপজেলা গঠন করায় এসব পরিষদের নামও নতুন আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন এসব উপজেলাকে তফসিলভুক্ত করার পর আইন সংশোধন ও বিধিমালা জারির মাধ্যমে নারী সদস্যদের নির্বাচন করতে হবে।
বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নারী সদস্যদের নির্বাচন যতো দ্রুত শেষ করা যায়, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জন্য ততোই মঙ্গল।
ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌর নির্বাচনে দেরি হওয়ার কারণেই উপজেলা মহিলা পরিষদের সদস্য নির্বাচন বিলম্বিত হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমএইচসি/এএল/জেকে/১০৫০ ঘ.